স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে আবু তাহের নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁর বিরুদ্ধে হলে নির্যাতন, হুমকি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু তাহেরকে মতিহার থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আবু তাহের রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক সাহার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আবু তাহের আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং হামলায় অংশ নেন। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। সম্প্রতি গোপনে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে আটক করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা দুজন পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাহেরকে ঘিরে ধরে অভিযোগের জবাব চান এবং ঘোষণা দেন— ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে নিয়ে যায়।
রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “আবু তাহের ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই, তবে কর্মী হিসেবে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলেছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আবু তাহের সম্প্রতি ফেসবুকে আওয়ামী লীগের একটি কর্মসূচি নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।”
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে, তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

