নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বৃহস্পতিবার। রাত ৯:১৭। ৭ আগস্ট, ২০২৫।

পাবনায় দিনেদুপুরে যুবককে অপহরণ, ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়

আগস্ট ৬, ২০২৫ ১০:৪৪
Link Copied!

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার মধ্য শহরে দিনদুপুরে এক যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে শহরের চারতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণ করে প্রথমে ওই যুবকের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে বিকাশ ও ব্যাংকের এটিএম কার্ডসহ মোট ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করে তারা। এ ঘটনার পরই পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই যুবক।

ভুক্তভোগী যুবক পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের চর আশুতোষপুর গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে সোলায়মান হোসেন শুভ। তিনি পেশায় ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়িক কেনাকাটা সংক্রান্ত কাজে শহরের টাউন হল থেকে পাবনা সেবা হাসপাতাল হয়ে চারতলা মোড়ের হার্ডওয়্যারের দোকানের উদ্দেশে রওনা হন সোলায়মান। পথে চারতলা মোড়ে পৌঁছালে ৩-৪ যুবক তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপর ফিরে তাকাতেই রাস্তার পাশ থেকে চাকু ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ করে পরিত্যক্ত চারতলা ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর মারধর করে তার কাছে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

আরও পড়ুনঃ  ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো

মানিব্যাগে থাকা ৫ হাজার ৬০০ টাকা ও তার বিকাশে থাকা ২১৫ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করে বন্ধুর থেকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা নিতে বাধ্য করে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আবারও ১০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বললে তা পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় আবারও তাকে ব্যাপক মারধর করে। এসময় এ দলে আরও কয়েকজন যোগ দিয়ে ৫-৭ জন মারধরে যোগ দেয়। পরে মানিব্যাগে থাকা ব্যাংকের এটিএম কার্ডের পিনকোড বলতে রাজি না হলে সোলায়মানের গলায় চাকু ও মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পিনকোড বলে বাধ্য করে। এরপর কার্ড থেকে চার দফায় দুর্বৃত্তরা ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়। পরে তাকে উলঙ্গ করে ওই এলাকায় অশ্লীল কাজে এসেছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে এবং সেটি ভিডিও করে দুর্বৃত্তরা। পরে কোথাও অভিযোগ দিলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  মেসিহীন মায়ামিকে জেতালেন ডি পল-সুয়ারেজরা

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বন্ধু রেজা বলেন, দুপুরে হঠাৎ ফোন দিয়ে টাকা চায় সোলায়মান। দ্রুত টাকা পাঠাতে বাধ্য করতে তাকে মারধর ও গালিগালাজ করতে শোনা যায় ফোনে। এসময় দ্রুত ৫ হাজার টাকা পাঠালে আবার আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তার সাথে বাকি ঘটনা ঘটে। এর মাঝে থানা পুলিশকে জানালে তারা লোকেশন ট্র্যাক করে সোলায়মানকে উদ্ধার চেষ্টা করে। তবে উদ্ধারের আগেই তার থেকে সব নিয়ে ছেড়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। দিনদুপুরে যে ধরনের ঘটনার সাক্ষি হলাম আমরা সেটি বর্ণনা করার মতো নয়। এ রকম পরিস্থিতি হলে আমরা রাস্তাঘাটে চলাচল করব কীভাবে?

ভুক্তভোগী সোলায়মান বলেন, দফায় দফায় মারধর ও টাকা নেবার পর আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ানো হয়েছে। এটি নিয়ে আমি আরও আতঙ্কে আছি। পরে এই ভিডিও-কে ব্যবহার করে তারা আবার আমাকে হয়রানি করতে পারে। তিনি বলেন, রক্ত পানি করে আয় করা টাকা। এই টাকাগুলো ছাড়া আমার তেমন সম্বল নেই। এখন আমি কিভাবে লেবারদের বিল দেব, কিভাবে আমিই চলবো। আমি এর বিচার চাই।

আরও পড়ুনঃ  পবার আরও দুই ইউনিয়নে চালু হলো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারতলা মোড়ের এক বাসিন্দা জানান, এই এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ইদানিং বেড়েছে। কয়েকদিন আগেও আরেকটি ছেলেকে ঘাড়ে ইঞ্জেকশন পুশ করে তুলে নিয়ে গিয়ে তার থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। দিনদুপুরে এসব কি হচ্ছে মধ্য শহরে? ঘর থেকে বের হতে গেলে আতঙ্ক কাজ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্যই এসব ঘটনা বাড়ছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তে এগুলো দমন করা উচিত।

এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানা পুলিশের ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। ইতোমধ্যে পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। দ্রুতই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।