রাবি প্রতিনিধি ; পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার ছুটির দিন জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থান শেষে বিক্ষোভ সমাবেশের সমাপ্ত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাঁরা, ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘চব্বিশের অভ্যুত্থান যে বিষয়কে কেন্দ্র করে হয়েছিল, সেটা ছিল অযৌক্তিক পোষ্য কোটা। জুলাই বিপ্লবের ছয় মাস পরে আমরা পোষ্য কোটা বাতিল করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আবার এই পোষ্য কোটা ফিরিয়ে এনেছে। এই মৃত পোষ্য কোটা কোনোভাবেই ফেরত আসতে দেওয়া যাবে না।’
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসুকে ঘিরে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, দলমত-নির্বিশেষে সকল প্রার্থীর মধ্যে যে ঐক্যের আবহ তৈরি হয়েছিল, তা ভন্ডুল করার উদ্দেশ্যে প্রশাসন পোষ্য কোটা আবার ফিরিয়ে এনেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনোভাবেই পোষ্য কোটা আর ফিরতে পারবে না।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রাত ১২টার দিকে তাঁরা বিক্ষোভ স্থগিত করেন এবং পরবর্তী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিক্ষোভ করেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল করা হয়েছে। এতে বলা হয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেলেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
শর্তগুলোর মধ্যে কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঔরসজাত বা গর্ভজাত সন্তান কোটার সুবিধা পাবে, ভর্তির প্রাথমিক আবেদনের জন্য বিজ্ঞাপিত যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করতে হবে, মেধার ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত হিসেবে এ প্রক্রিয়ায় ভর্তির বিষয়টি বিবেচিত হবে, প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করে মেধা তালিকা করা হবে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্ধারিত শর্তাবলিসহ অবশ্যই ন্যূনতম পাস নম্বর থাকতে হবে, কোনো বিভাগে দুজনের অধিক ভর্তির সুযোগ থাকবে না, কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানকে তাঁর কর্মরত বিভাগে ভর্তি করানো যাবে না, ‘অটো মাইগ্রেশন’ ছাড়া শিক্ষার্থীর বিভাগ পরিবর্তনের অন্য কোনো সুযোগ থাকবে না, ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সুবিধার আওতায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী কোনোভাবেই আবাসিক হলে সিটের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবে না।