নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা মঙ্গলবার। বিকাল ৩:৩০। ১ জুলাই, ২০২৫।

বোতলজাত সয়াবিনের সংকট

মার্চ ২২, ২০২৩ ৪:২৭
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার: রমজান মাস সামনে রেখে রাজশাহীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমে গেছে। খোলা সয়াবিন পাওয়া গেলেও মিলছে না বোতলজাত তেল। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পরিবেশকরা সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। তবে পরিবেশকদের দাবি, তারা যে পরিমাণ তেল পাচ্ছেন তা বাজারে দিয়ে দিচ্ছেন।

আর ভোক্তারা বলছেন, বাজারকে ফের অস্থিতিশীল করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটতে পরিবেশক-বিক্রেতা মিলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ভদ্রা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ’দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের আমদানি ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে। তারা আসন্ন রমজানকে টার্গেট করে বাজার অস্থিতিশীল করতে চাইছে।’ নিউমার্কেট এলাকার জামাত খান বলেন, ’স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কোম্পানির প্রতিনিধিরা মিলে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম দেখিয়ে দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। এজন্য তারা রমজান মাসকে টার্গেট করেছে। কারণ এই মাসে দেশে ভোজ্য তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়।‘

আরও পড়ুনঃ  রুয়েটে উদ্ভাবনের রঙিন উৎসব

বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮ টাকায়। আর খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেলের পরিবেশকদের দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী জেলায় প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ টন সয়াবিন তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বোতলজাত সয়াবিন তেলের চাহিদা ২০০ টন বা তার বেশি। তবে রমজান মাসে সব ধরনের সয়াবিন তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় গড়ে প্রায় ১ হাজার ৮০০ টন।

রাজশাহীতে রূপচাঁদা, বসুন্ধরা, তীর, ফ্রেশ এবং পুষ্টির অন্তত ১২জন পরিবেশক বোতলজাত তেল বাজারজাত করেন। তারা মাসে গড়ে ৮ থেকে ১০ টন তেলের জন্য কোম্পানিকে অগ্রিম অর্থ প্রদান করেন। কোম্পানিগুলো টাকা নিয়েও সময়মতো তেল সরবরাহ করে না বলে দাবি করেন পরিবেশকরা। তারা জানায়, এই ব্র্যান্ডগুলোর বাইরেও আস্থা ও মোস্তাফা ব্র্যান্ডের পরিবেশকরা বোতলজাত তেল বাজারজাত করে। নগরীর বড় বাজার হিসেবে পরিচিত সাহেব বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের জানিয়েছে, কোম্পানিগুলোই বোতলজাত তেল সরবরাহ করতে পারছে না।

আরও পড়ুনঃ  রাসিকের সহকারী প্রকৌশলী প্রভাত কৃষ্ণ সরকারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

সাহেব বাজারের শাহ আলম স্টোরের স্বত্বাধিকারী শাহ আলম বলেন, ’বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কোম্পানি মাল দিচ্ছে না।’

বাগদাদ স্টোরের মালিক মো. নজরুল বলেন, ’ফ্রেশ কোম্পানির তেলটা পাওয়া যাচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত না। অন্য কোম্পানিগুলো তো একেবারেই দিচ্ছে না ‘ প্রায় একই অভিযোগ করেন মাহি ট্রেডার্সের মালিক রাকিব। তিনি বলেন, ’চাহিদা বেশি এমন কোম্পানির তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। দুই লিটারের বোতল প্রায় মিলছেই না। তবে আস্থা বাজার ধরতে মার্কেটিং করছে।’ ব্যবসায়ীরা জানায়, বহুদিন থেকেই বাজারে বসুন্ধরার বোতলজাত তেল তারা পাচ্ছেন না। সব কোম্পানিই আভাস দিয়েছে তেলের দাম বাড়তে পারে।

সরবরাহ কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে পুষ্টির এরিয়া সেলস অফিসার ইমদাদুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে চাননি। বসুন্ধরা সয়াবিন তেলের পরিবেশক শাহরিয়ার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার ফারুক বলেন, ’প্রায় তিন মাস থেকে আমরা কোনো তেল পাচ্ছি না। তেলের জন্য যে টাকার চালান কেটে রেখেছিলাম, ওই টাকার অন্য মাল দিয়েছে কোম্পানি।’

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে শতকেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার

রূপচাঁদার পরিবেশক হাইউম বলেন, ’দুই লিটারের বোতল ঘাটতি রয়েছে। কোম্পানি দিলেই আমরা বাজারে সরবরাহ করতে পারব।’ ফ্রেশের রাজশাহী জেলা পরিবেশক মিঠু বলেন, ’বাজারে তেল সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তবে আমরা কোম্পানিকে যেদিন টাকা দিচ্ছি তার ৪ থেকে ৫ দিন পর মাল সরবরাহ করছে। যে পরিমাণ মালের জন্য আমরা চালান কাটছি, তার কিছু কম দেওয়া হচ্ছে। তবে পরবর্তী চালানের সঙ্গে তা সমন্বয় করছে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।