অনলাইন ডেস্ক : আগের দিনই সেঞ্চুরির মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম। আজ সেটার আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন। মুশফিকের পর তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন লিটন দাসও। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ বিকেলে বোলিংয়েও আলো ছড়িয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় একশ করার আগেই আইরিশদের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছে টাইগাররা।
মিরপুর টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৯৮ রান করেছে আয়ারল্যান্ড। এখনো বাংলাদেশের চেয়ে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে তারা। এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৪৭৬ রান করেছে।
শুরুটা ভালোই করেছিল আয়ারল্যান্ড। দুই ওপেনার অ্যান্ডি বার্লবির্নি ও পল স্টার্লিং উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৬ বলে ২৭ রান করে স্টার্লিং আউট হলে ভাঙে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি। তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফিরিয়েছেন খালেদ আহমেদ।
আরেক ওপেনার বার্লবির্নি ৬০ বলে করেন ২১ রান। তিনে নেমে ব্যর্থ ক্যাড কারমাইকেল। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ রান। এরপর হ্যারি টেক্টর-কুর্তিস ক্যাম্পারদেরও দ্রুত ফিরিয়েছেন তাইজুল-মুরাদরা। তাতে ৯৪ রানেই পঞ্চম উইকেট হারিয়ে ফলো অনের শঙ্কায় পড়েছে আইরিশরা।
এর আগে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আগেরদিন ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিক। বিশ্বের মাত্র ১১তম ব্যাটার হিসেবে তিনি শততম ম্যাচ সেঞ্চুরিতে রাঙিয়েছেন। ১০৬ রান করে মুশফিক ফেরার পর সেঞ্চুরি করেন লিটন দাসও। তার পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি থামে ১২৮ রানে। এ ছাড়া মুমিনুল হক ৬৩ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ৪৭ রান।
বাংলাদেশ ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে মাত্র তৃতীয় দেশ হিসেবে টেস্টের একই ইনিংসে ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ উইকেটে ১০০ রানের জুটি গড়ে। এর আগে কেবল ভারত (১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এবং পাকিস্তান (২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) একই কীর্তি গড়েছিল। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে মুশফিক-মুমিনুলের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০৭, মুশফিক-লিটনের পঞ্চম উইকেটে ১০৮ এবং লিটন-মিরাজের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২৩ রান পায় বাংলাদেশ।
মুশফিক-লিটন বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ সপ্তমবার একশ’র বেশি রানের জুটি গড়লেন। যার ভিতটা তারা গড়েন গতকাল প্রথম দিনে। আজ দলীয় রানের খাতায় নতুন করে ১৮ রান যোগ করতেই মুশফিককে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ম্যাথু হামপ্রিস। ২১৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি ৫টি চারের সাহায্যে। মুশফিক বাংলাদেশের হয়ে (মুমিনুলের সঙ্গে) যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১৩টি সেঞ্চুরি করেছেন। এরপর জুটি গড়েন লিটন-মিরাজ। গত বছরের আগস্টের পর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। গ্যাভিন হোয়ের বলে ক্যাচ তুলে মিরাজের (৪৭) বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি।
এরপর লিটনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন তিনি, হাম্প্রিসের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। ১৯২ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় থামলেন ১২৮ রানে। শেষ দিকে ক্যামিও খেলেছেন এবাদত। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান করে তিনি অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশ অলআউট হয় ৪৭৬ রানে।
আইরিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট শিকার করেছেন অভিজ্ঞ স্পিনার ম্যাকব্রাইন। এ ছাড়া ম্যাথু হাম্প্রিস ও গ্যাভিন হোয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।

