নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শনিবার। রাত ৩:৩০। ৫ জুলাই, ২০২৫।

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা বন্ধে বাড়বে রুশ আগ্রাসন, আশঙ্কা ইউক্রেনের

জুলাই ৩, ২০২৫ ৪:৪৩
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় রাশিয়া আরও আগ্রাসী হয়ে উঠবে বলে ইউক্রেন আশঙ্কা করছে। দেশটির আশঙ্কা, এর ফলে যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ইউক্রেনকে দেওয়া কিছু অস্ত্র সহায়তা স্থগিত করার কথা জানায় হোয়াইট হাউস। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব অস্ত্র মজুত বিপজ্জনকভাবে কমে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আন্না কেলি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সবার আগে” — এই নীতির ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা দপ্তরের পর্যালোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে দুই দেশ এখন বিস্তারিত বিষয়গুলো স্পষ্ট করার কাজ করছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সতর্ক করে বলেছে, “এই ধরনের দেরি কেবল যুদ্ধ ও সন্ত্রাস চালিয়ে যেতে আগ্রাসী শক্তিকে উৎসাহিত করবে, শান্তির পথ বেছে নিতে নয়।”

বিশেষ করে ইউক্রেন এখন রাশিয়ার লাগাতার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করার ওপর জোর দিচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ‘পৃথিবীর অন্য কোনো শহরকে কলকাতার মতো মনে হয় না’

অস্ত্র সহায়তা স্থগিতের পর একজন মার্কিন কূটনীতিককে বুধবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পায়নি। মন্ত্রণালয় জনগণকে অসম্পূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে তারা এটাও বলেছে, যুদ্ধ থামাতে হলে “আগ্রাসনকারীর ওপর ধারাবাহিক ও যৌথ চাপ” বজায় রাখা জরুরি।

বিবিসি বলছে, গত সপ্তাহান্তে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর এযাবতকালের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালায়। এতে ৫০০টির বেশি ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় বিভিন্ন শহরের দিকে। আর এর মধ্যেই ইউক্রেনকে দেওয়া কিছু অস্ত্র সহায়তা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।

অবশ্য কোন ধরনের অস্ত্র পাঠানো স্থগিত করা হয়েছে তা স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি জানিয়েছে, এর মধ্যে প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর, হাউইৎজার গোলাবারুদ, মিসাইল ও গ্রেনেড লঞ্চারও রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রাসিকের সহকারী প্রকৌশলী প্রভাত কৃষ্ণ সরকারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দশ হাজার কোটি ডলারের বেশি সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তবে এখন ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু অংশ আশঙ্কা করছে, এত সহায়তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব অস্ত্র মজুত বিপজ্জনকভাবে কমে যাচ্ছে।

ক্রেমলিন এই সহায়তা কমানোর খবরকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ইউক্রেনে যত কম অস্ত্র পাঠানো হবে, যুদ্ধের অবসান ততই কাছে আসবে।”

অন্যদিকে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট সদস্য ফেদির ভেনিস্লাভস্কি বলেন, এই সিদ্ধান্ত “বেদনাদায়ক” এবং রাশিয়ার সন্ত্রাসী হামলার পটভূমিতে এটা খুবই “দুর্ভাগ্যজনক”। ইউক্রেনের এক সামরিক সূত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ইউক্রেন “ব্যাপকভাবে মার্কিন অস্ত্র সহায়তার ওপর নির্ভরশীল” এবং ইউরোপ চেষ্টা করলেও “আমেরিকার গোলাবারুদ ছাড়া আমাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন।”

ইউরোপীয় দেশগুলো গত সাড়ে তিন বছরে ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তবে সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন নেই এই সহায়তার পক্ষে। চেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ন্যাটো কর্মকর্তা পেত্র পাভেল বলেন, তিনি ইউক্রেনের পক্ষে থাকলেও ভবিষ্যতে তার দেশ গোলাবারুদ দেবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, কারণ সামনে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  দলেই নেই সাবিনা, বাফুফের ওয়েবসাইটে ‘অধিনায়ক’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, সহায়তা স্থগিতের পেছনে কারণ হলো দেশটির অস্ত্র মজুত দ্রুত কমে যাওয়া। যদিও হোয়াইট হাউস দাবি করছে, “আমেরিকার সামরিক শক্তির দৃঢ়তা প্রশ্নাতীত— চাইলে ইরানকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।”

ডিফেন্স পলিসির আন্ডারসেক্রেটারি এলব্রিজ কোলবি বলেন, “প্রেসিডেন্টকে সামরিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন বিকল্প দেওয়া হচ্ছে”, কিন্তু এই সহায়তা যেন যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব প্রস্তুতিও ব্যাহত না করে সেটাও মাথায় রাখতে হবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।