নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার। রাত ৮:৫৩। ২১ আগস্ট, ২০২৫।

রাজশাহীতে পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি

আগস্ট ২১, ২০২৫ ২:৫৫
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : বাঘায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নদ-নদীগুলোর পানি কমছে। পদ্মার পানি বর্তমানে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার বিপৎমা ১৩.৮০ মিটার। গতকাল সেই পয়েন্টে পানি ১২.৯৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচে।

এদিকে পানি নেমে গেলেও বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ভারী বৃষ্টি দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। পানিতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়রা। গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও অনেকে বিপাকে পড়েছেন। রয়েছে সুপেয় পানির সংকটও।

জানা যায়, এবারের বন্যায় ১৭০০ বিঘা আবাদিজমিসহ গোচরণভূমি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। ডুবে যায় লক্ষ্মীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন চকরাজাপুর ও গড়গড়ি ইউনিয়নের ২ হাজার ৪০০ পরিবার। ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ চারপাশের ৫০ পরিবার।

আরও পড়ুনঃ  চিকিৎসকদের নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন আইন উপদেষ্টা

চকরাজাপুর ইউনিয়নের আতারপাড়া গ্রামের সুমন হাওলাদার জানান, পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে। শতাধিক পরিবারের ঘরের পানি এখনও নামেনি। কোথাও কোথাও তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে দুর্ভোগের কথা জানান মহিদ ঢালী, ইব্রাহীম হাওলাদার, মাদার ব্যাপারি, জবলু কাজিসহ কয়েকজন। তারা বলেন, বন্যার কারণে কাজ বন্ধ। আয়-রোজগার না থাকায় পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।

উপজেলার কালিদাশখালী গ্রামের চান মিস্ত্রী জানান, ঘরে হাঁটুপানি ছিল। এখন কমেছে। সড়ক ক্ষত-বিক্ষত। কাজের জন্য বাইরে যেতে পারছি না। চারজনের সংসার। কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। একই গ্রামের বাতেন মোল্লা জানান, নীচপলাশি-ফতেপুর মাঠে পাঁচ বিঘা জমির কাউন ও তিন বিঘা জমির আধাপাকা ধান ডুবে গেছে। আবাদের খরচ বাদেই প্রতিবিঘা জমি লিজ নিতে হয়েছে ২৫ হাজার টাকায়। কাউন আবাদে খরচ হয়েছিল ৬৫ হাজার টাকা।

আরও পড়ুনঃ  রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রেরণ

ইউনিয়নটির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রুনিয়া খাতুন বলেন, ‘৩০ হাজার টাকায় তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা আবাদ করেছিলাম। বিঘাপ্রতি ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বন্যায় ডুবে সব শেষ।’

৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় ক্ষতি হয়েছে বেশি। সে তুলনায় ভুক্তভোগীদের সহায়তা দেওয়া যায়নি। পরে সহায়তা পেলে, বাদপড়াদের আগে দেওয়া হবে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, তাঁর ওয়ার্ডে সরকারিভাবে ২২০ জনকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার

জানা গেছে, গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর গুচ্ছগ্রামে সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার সোয়াবিন তেল, ১০০ গ্রাম করে হলুদ, মরিচ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, শতাধিক হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউএনও বলেন, চৌমাদিয়া গ্রামে ২২০ পরিবারকে চাল ও খানপুর গুচ্ছগ্রামের ৮৫ পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আশা করছি মানুষ এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।