স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) কার্যক্রমে চরম অচলাবস্থা চলছে। যা দ্রুত নিরসনের আহবান জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
রোববার সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনার কারণে নাগরিক সেবায় স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এতে নগরবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
রাজশাহী সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তরিকুল ইসলাম স্বপন। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, রাজশাহী সিটি করপোরেশন দেশের অন্যতম নাগরিক সেবামুলক একটি প্রতিষ্ঠান। দেশ-বিদেশে এ শহরের সুনাম আছে এটা সবাই জানেন। অথচ আজ এই সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তরিকুল ইসলাম স্বপন নগরবাসীর ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক ও মৃত্যু সনদপত্র পেতে ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন হোল্ডিং খোলার জন্য সেবাগ্রহীতা এলে কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ছেন। ভবন নির্মাণে এনওসি পেতে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। বিভিন্ন ধরনের ছাড়পত্র পেতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন করে খুলতে গেলেও চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা গ্রহীতারা। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ওলিগলিতে বৈদ্যুতিক ল্যাম্পপোস্টগুলোতে মাসের পর মাস লাইট না থাকলেও সে বিষয়ে নেই কোন ভ্রæক্ষেপ। বিভিন্ন ধরনের ভাতা পেতেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভাতাভোগিদের।
তরিকুল ইসলাম স্বপন বলেন, শহরের চলমান ফ্লাইওভারের কাজে ধীরগতির কারণে জনসাধারণের কষ্টের অন্ত নেই। রাসিক কর্তৃক শহরে চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প কাজের বিপরীতে ঠিকাদারদের বিল সংক্রান্ত ফাইল মাসের পর মাস কোন কারণ ছাড়াই আটকে রাখা হচ্ছে।
এ সময় তিনি স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সিটি করপোরেশনের এই অচলাবস্থা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঠিকাদার ইয়াহিয়া খান মিলু, গাজী কন্সট্রাকশনের মালিক গাজী সালাহউদ্দিন, ঠিকাদার হাফিজুল ইসলাম আপেল, বেলাল খান, মজিদ কন্সট্রাকশনের সারওয়ার জাহান বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে মজিদ কন্সট্রাকশনের মালিক সারওয়ার জাহান অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের ৩৮% কাজ শেষ হলেও বিল পাচ্ছি না। ৭৯ কোটি টাকার প্রকল্পে মাত্র ১২ কোটি টাকা বিল দেওয়া হয়েছে। বাকি বিল না পাওয়ায় ভদ্রা কাঁচাবাজারের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। এভাবে কাজ করা সম্ভব নয়।’’
গাজী কন্সট্রাকশনের গাজী সালাহউদ্দিন বলেন, সিটি করপোরেশনে গত কয়েক মাস ধরে সেবাগ্রহীতাদের প্রতি দুর্ব্যবহার ও অনিয়ম বেড়েছে। ঠিকাদারদের বিল মাসের পর মাস আটকে রাখায় নগরীর ফ্লাইওভার ও অন্যান্য উন্নয়নকাজের গতি থমকে গেছে। ফলে ট্রাফিক জটসহ জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, ‘‘কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও অবহেলার কারণে সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না হওয়ায় সিটি করপোরেশনকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাই অস্থায়ী প্রশাসকের বদলে স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ করা হলে সেবার মান ও কাজের গতি বাড়বে।’’