চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর চারঘাটে পরকীয়ার সূত্র ধরে পারিবারিক বিরোধের জেরে স্বামী ও স্ত্রীর বাড়ির দু’পক্ষের সংঘর্ষে অনিক ইসলাম হৃদয় নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ।
নিহত অনিক ইসলাম হৃদয় (২৪) উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের ইয়ার উদ্দিনের মেয়ে রেখার সাথে গোপালপুর গ্রামের মজিবরের ছেলে মিঠুনের বিয়ে হয় সাত বছর আগে। মিঠুনের একাধিক স্ত্রী রয়েছে, রেখারও তৃতীয় স্বামী মিঠুন। একটি মারামারির মামলায় জেল থেকে গত বুধবার জামিন পেয়ে বাড়িতে এসেছে মিঠুন। সে বাড়িতে এসে জানতে পারে স্ত্রী তারই আপন চাচাতো ভাই দীপুর সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছে।
এরপর শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চাচাতো ভাই ও স্ত্রীকে নিজ ঘরে থেকে আটক করে স্থানীয়রা। স্ত্রীর পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে খবর দেয়। রাত ২টার দিকে রেখার পরিবারের লোকজন মিঠুনের বাসায় আসে। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সময় দুই পক্ষ তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মিঠুন ও তার লোকজন তার স্ত্রীর পরিাবারের লোকজনকে এলোপাতাড়ি ভাবে ছুরিকাঘাত করে। এতে অনিক ইসলাম হৃদয় (২৪), কাবুল (৩৭), মান্না (২২), মুন্নি (২৭), মেহেরুন (৩২) ও সোহান (২৩) ছয়জন গুরুত্বর আহত হয়। এর মধ্যে হৃদয়কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত অনিক ইসলাম হৃদয়ের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে চারঘাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আবুল কালাম বলেন, গভীর রাতে খবর দেওয়া হয় রেখা মারা গেছে। এ খবর শুনে অটোরিকশা নিয়ে সবাই গোপালপুর গিয়েছিল। পরে পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে কোনো কারণ ছাড়া এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমার ছেলের বুক ও পিঠের একাধিক জায়গায় ছুরিকাঘাত করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনায় মিঠুন আলীর চাচা শুকটা বিশ্বাস (৬২) ও চাচাতো ভাই রাজু আলী (২৩) কে আটক করেছে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে৷ ইতিমধ্যে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।