নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শুক্রবার। রাত ১২:১০। ৭ নভেম্বর, ২০২৫।

দুস্থদের জন্য সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নভেম্বর ৬, ২০২৫ ৬:৫০
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: দুস্থ, অসহায় ও এতিমদের জন্য সৌদি আরব সরকারের অনুদান হিসেবে পাঠানো দুম্বার মাংস নিয়ে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। বরাদ্দকৃত এসব মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের পরিবর্তে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে গত বুধবার (৫ নভেম্বর) সৌদি সরকারের পাঠানো মোট ১৯ কার্টন দুম্বার মাংস দুর্গাপুর উপজেলায় আসে। নির্দেশনা ছিল—এসব মাংস উপজেলার দরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করতে হবে। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরাদ্দ আসার পর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গোপনে মাংস ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “সন্ধ্যার পর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কয়েকজন কর্মকর্তা এসে মাংসের কার্টনগুলো ভাগ করে নেন। অল্প কিছু মাংস স্থানীয় একটি মাদ্রাসার এতিম শিশুদের মধ্যে দেওয়া হলেও, বেশিরভাগ মাংসই কর্মকর্তারা নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান।”

দুর্গাপুর থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের লোকজনই সব মাংস ভাগ করে খেয়েছে। থানায় এক টুকরোও দেয়নি। এমনকি আমাদের বিতরণের সময় জানানোও হয়নি।”

পৌর এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। কত দিন মুখে মাংস দিইনি। সরকার থেকে মাংস এসেছে শুনলাম, কিন্তু এক টুকরাও পাইনি।”

চককৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের মতো গরিব মানুষ কোনো বছরই এমন সহায়তার খবর পাই না। সব সময় বড়লোকেরাই আগে খবর পায়, তারাই এসব নেয়।”

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ জানান, সৌদি সরকারের এমন মানবিক সহায়তা তাদের জন্য পাঠানো হলেও তারা এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি অনুদান বণ্টনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করায় এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এস.এম. শামীম আহম্মেদ বলেন, “সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস উপজেলায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন মাদ্রাসা এবং কিছু অসহায়-দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। মাংস বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। যেহেতু এগুলো ছিল ফ্রিজারজাত মাংস, তাই সংরক্ষণের সুযোগ ছিল না—পৌঁছানোর পরই দ্রুত বিতরণ করা হয়। তবে মাদ্রাসা ও দুস্থদের বাইরে কাউকেই মাংস দেওয়া হয়নি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।