অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ধাক্কায় শুক্রবার সকালে আচমকা কেঁপে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা শহরের মাটি। কম্পন অনুভূত হয়েছে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, অর্থাৎ রাজ্যের সর্বত্র।
আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব গবেষণা ও জরিপ সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৫। তবে ভারতের ভূকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বা এপিসেন্টার বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলার কাছে। ঢাকা শহর থেকে এপিসেন্টারের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার এবং নরসিংদি থেকে ৭ কিলোমিটার। ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল।
হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদসহ পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলায় ভূমিকম্প টের পাওয়া গেছে। অনুভূত হয়েছে মৃদু কম্পন। সকাল ১০টা ৮ মিনিট নাগাদ কম্পন শুরু হয়। বেশ কয়েক সেকেন্ড তা চলেছে। ঘরের মধ্যে পাখা, চেয়ার, টেবিল দুলতে দেখা গিয়েছে। দেওয়ালে টাঙানো ছবিও দুলে উঠেছে কোথাও কোথাও। কলকাতাসহ রাজ্যে শীতের আমেজ থাকায় অধিকাংশ বাড়িতেই সিলিং ফ্যান বন্ধ। ফলে কম্পন আরও ভাল ভাবে বোঝা গিয়েছে সিলিং ফ্যান দেখে। আতঙ্কে অনেকে বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।
কলকাতা ভূমিকম্পপ্রবণ শহর নয়। সচরাচর এখানে কম্পন হয় না। বাংলাদেশে কখনও কখনও ভূমিকম্প হলে মৃদু কাঁপে শহর। তবে শুক্রবার সকালে চিত্রটা ছিল ভিন্ন। শহরের সর্বত্র তো বটেই, রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্তেও মাটি কেঁপেছে। ভূমিকম্পের উৎসস্থল খুব একটা গভীরে ছিল না বলেই এত জোরালো ভাবে কম্পন বোঝা গিয়েছে, মত একাংশের।
সমাজমাধ্যমে অনেকেই নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। কেউ ঘরের সিলিং ফ্যান, ঝাড়বাতির ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। কেউ আবার রাস্তার ভিডিয়ো দিয়েছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষ বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এই সমস্ত ছবি বা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
দু’মাস আগে আসামের ভূমিকম্পে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা কেঁপে উঠেছিল। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গেও তার মৃদু প্রভাব পড়েছিল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলের সেই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল অসমের গুয়াহাটি এবং তেজপুরের মাঝে ওদালগুরি। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৮। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার গভীরে কম্পনটি হয়েছিল। তবে সেই ভূমিকম্পে কলকাতায় এত জোরালো প্রভাব পড়েনি।
সূত্র : আনন্দবাজার, এনডিটিভি

