নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ মঙ্গলবার। দুপুর ১:১৮। ২৫ নভেম্বর, ২০২৫।

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য নিজ দেশ থেকে টেন্ডারে চাল কিনছে পাকিস্তান

নভেম্বর ২৪, ২০২৫ ১১:৫২
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার উদ্দেশ্যে একটি টেন্ডার আহ্বান করেছে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিপি)।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পাকিস্তানের দৈনিক ডন এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে।

২০ নভেম্বর জারি করা এই দরপত্রে বলা হয়েছে, আগামী ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে।

দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পর ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক যোগাযোগ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত হওয়ার ধারায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ার সূচনাও দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উভয় দেশ প্রথমবারের মতো সরকার-সরকার পর্যায়ের বাণিজ্যে যুক্ত হয়ে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে নতুন অধ্যায় শুরু করে।

আরও পড়ুনঃ  আসন্ন নির্বাচনে কমনওয়েলথের পূর্ণ সমর্থন চাই : প্রধান উপদেষ্টা

টেন্ডার অনুযায়ী, কোম্পানি, পার্টনারশিপ এবং একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে আলাদা সিল করা দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। টিসিপি ১ লাখ টন লম্বা দানার সাদা চাল (আইআরআরআই-৬) কিনবে, যা পরে প্যাকেটজাত করে করাচি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হবে। দরপত্র জমা দেওয়ার পর মূল্য প্রস্তাবকে ২১ কার্যদিবস পর্যন্ত বৈধ থাকতে হবে এবং চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে চাল জাহাজীকরণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

দরপত্রে বলা হয়েছে, সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টন থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টন পর্যন্ত চালের প্রস্তাব জমা দেওয়া যাবে, যেখানে ৫ শতাংশ ভ্যারিয়েন্সের সুযোগ রয়েছে। চাল অবশ্যই পাকিস্তানের সর্বশেষ মৌসুমে উৎপাদিত এবং মানুষের ভক্ষণযোগ্য হতে হবে। এতে কোনো দুর্গন্ধ, ছত্রাক, পোকামাকড়, বিষাক্ত আগাছার বীজ বা সংক্রমণের চিহ্ন থাকতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ  রেকর্ড সংখ্যক পর্যবেক্ষক নিয়ে ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে : ইসি সানাউল্লাহ

রয়টার্স জানিয়েছে, ব্যবসায়ীরা এই দরপত্রকে বাংলাদেশের চাল আমদানি ব্যবস্থায় পাকিস্তানি চাল অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাব্য উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।

বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আমদানির কিছু অংশে ভারতীয় চাল সরবরাহের সম্ভাবনা থাকলেও পাকিস্তান এখন নতুনভাবে এই বাজারে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে চাইছে। স্থানীয় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ সোমবার আরও একটি চাল আমদানির টেন্ডার ঘোষণা করেছে।

গত মাসে অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠকে পাকিস্তান প্রস্তাব করেছে যে, বাংলাদেশ চীন ও মধ্য-এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে করাচি পোর্ট ট্রাস্ট ব্যবহার করতে পারে। এতে আঞ্চলিক বাণিজ্যে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে ২০২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি ২৮ শতাংশ কমে গেছে, যা নীতি ও নিয়ন্ত্রক জটিলতার কারণে খাতটির মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে যানবাহন তল্লাসী করে ভারতীয় মালামাল আটক

পাকিস্তান রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের ২০২৪ সালে চাল রপ্তানি পুনরায় শুরু করা, বাসমতিতে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (এমইপি) প্রত্যাহার এবং শূন্য-হার চাল রপ্তানি নীতি পাকিস্তানের প্রতিযোগিতায় প্রভাব ফেলেছে।

তবে পাকিস্তানি রপ্তানিকারকরা সরাসরি মূল্য যুদ্ধে না যাওয়ায় ভারতের বাজারে ফিরে আসার পরও ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানের চাল বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতীয় বাসমতি চালসহ নানা পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় পাকিস্তান মার্কিন বাজারে নতুন সুযোগ পেয়েছে।

ভলজা গ্লোবাল ট্রেড প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানের মোট বাসমতি চাল রপ্তানির ২৪ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।-সূত্র: ডন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।