এস এম আব্দুর রহমান : রাজশাহীতে আধিপত্য বিস্তারে মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই গ্রামের মানুষ। এতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন। সংঘর্ষের সময় একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার জেলার চারঘাট উপজেলার শিবপুর ও পুঠিয়া উপজেলার দীঘলকান্দী গ্রামের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১২ জনকে আটক করেছে বলে পুলিশ জানায়। তবে আটককৃতরে নাম পরিচয় জানা যায়নি।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আর নিহত-আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত হলেন, উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত হালিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৫৫)।
আহতরা হলেন- তেকাতের ছেলে কালাম (৬০), বাদলের ছেলে আজাদ (৫৫) ও সালাম (৫০), রিপন (৩৫), পুলিশ সদস্য আপেল (৩৩)। বাকিদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে চারঘাটের শিবপুর ও পুঠিয়ার দিঘলকান্দি এলাকার মধ্যে হলিদাগাছি শিশিতলা বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে দুইটি এলাকার কয়েকজনরে মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় তাদের মধ্যে ধস্তাধতির ঘটনাও ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত পরে। পরে দুই পক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এই ঘটনার জেরে শনিবার সকালে দিঘলকান্দির লোকজন মাইকিং মাধ্যমে এলাকাবাসিকে সংঘবদ্ধ করে শিশিতলা বাজারে উঠার চেষ্টা করে। অপরদিকে শিবপুর গ্রামের লোকজন একই কৌশলে এলাকাবাসিদের জড়ো করে।
এমন উত্তেজনা কর খবরে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম ও মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, বানেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সুলতানসহ দুটি গ্রামের ৩০ জন বিষয়টি মিমাংসার জন্য সালিশে বসেন।
এসময় দিঘলকান্দি এলাকার সবুজ ও আবু সামা দুজন দেশীয় অস্ত্রসহ শিবপুর গ্রামের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে দুই এলাকার মানুষ সংঘর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তাদের ধারালো অস্ত্রে আঘাতে একজন পুলিশ সদস্য আপেল ও ইউপি সদস্য, রেজাউল ইসলামসহ ৬ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আহত রেজাউলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, সংঘর্ষের খবরে চারঘাট ইউএনও সৈয়দা সামিরা, পুঠিয়া ইউএনও নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাজ, চারঘাট সার্কেল সিনিয়র এএসপি নূরে আলম সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে বর্তমানে ওই এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
চারঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্ষন্ত কোন মামলা হয়নি।