স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পবা উপজেলার শিতলাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে এবার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি পবা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা রওশন জাহানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক অভিভাবক। আজ বৃহস্পতিবার অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করার কথা রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসী এর আগে একই উপজেলার হাড়ুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ফেসবুকে স্টোরি প্রকাশের কারণে ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট তিনি ওই স্কুলের একজন নারী সহকারী শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করিয়েছিলেন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তাকে শিতলাই বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।
এ বিদ্যালয়ে গিয়েও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। এ নিয়ে একজন অভিভাবক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বিভাগী প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককেও দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, নাজমা ফেরদৌসী এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন জাতীয় দিবসে শিশুদের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করেননি। এ বছর এবং গেল বছর বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেও পুরস্কার বিতরণ করছিলেন না। একজন অভিভাবক এর প্রতিবাদ করায় তিনি তার ওপর চড়াও হন এবং দুর্ব্যবহার করেন। তিনি প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের কোনো তালিকাই সংরক্ষণ করেননি। পরে দায় এড়ানোর জন্য কয়েকজন পছন্দের শিক্ষার্থীকে অফিস কক্ষে ডেকে তাদেরকেই জিজ্ঞাসা করেন কে প্রথম, কে দ্বিতীয়। এরপর নামসর্বস্ব পুরস্কার দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসী বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বার্ষিক বরাদ্দের টাকা দিয়ে চোখে পড়ার মত কোন কাজ করেননি। সেই অর্থের হিসাব তিনি ম্যানেজিং কমিটিকে দেননি। বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করায় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের অকেজো ফ্যান বছরের পর বছর অকেজো থাকে। এছাড়া ওয়াশব্লক নোংরা, শিশুদের ওয়াশব্লকে সাবান না থাকা, ব্যবহৃত পানির ট্যাংক পরিষ্কার হয় না। থাকে না শিশুদের খেলার সামগ্রী।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেছেন, প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসী দুই বছর আগে এখানে এসেছেন। এ দুই বছরে তিনি অনেক অনিয়ম করেছেন। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলেই এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে বলে তারা জানান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসী কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত হবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তদন্ত কর্মকর্তা স্কুলে আসবেন। তিনি যদি অভিযোগের সত্যতা পান, তারপরে এসব নিয়ে মন্তব্য করব।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পবা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা রওশন জাহানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

