অনলাইন ডেস্ক : গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার আগে বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তির ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টা করে একদল যুবক। পুলিশের ধারণা, ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক তুহিন।
ঘটনাসংশ্লিষ্ট একটি সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক প্রকাশ্যে এক তরুণীকে মারধর করছেন। তখন ৬-৭ জন যুবক চাপাতি, রামদা ও ছুরি নিয়ে ওই যুবকের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। তিনি দৌড়ে পালালে তারা ধাওয়া দেয়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ সময় সাংবাদিক তুহিন মোবাইল ফোনে ঘটনাটির ভিডিও করছিলেন। সেটি টের পেয়ে অস্ত্রধারীরা তাকেও ধাওয়া করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি আশ্রয় নেন চান্দনা চৌরাস্তার ঈদগাঁ মার্কেট এলাকার একটি চায়ের দোকানে। দুর্বৃত্তরা সেখানেই ঢুকে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে এবং দ্রুত পালিয়ে যায়।
চা দোকানের এক কর্মী বলেন, “ভাই (তুহিন) দোকানে এসে ঢোকার পরপরই পাঁচজন রামদা, চাপাতি ও ছুরি নিয়ে এসে তাকে ঘিরে ধরে কুপাতে থাকে। আমি তাদের থামানোর অনুরোধ করি। তারা আমাকে গালাগালি করে বলে, ‘তোর ঘাড় ফেলে দেব’। পরে আমি নিচে গিয়ে লুকিয়ে পড়ি।”
তিনি আরও জানান, “প্রকাশ্যে গলা কেটে হত্যার সেই দৃশ্য অসংখ্য মানুষ দেখছিলেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।”
তুহিনের বন্ধু শামীম হোসেন বলেন, “আমি ও তুহিন একসঙ্গে ছিলাম। হঠাৎ দেখি একজন নারী ও কয়েকজন ছেলে একজনকে ধাওয়া করছে। তখন সে দৌড় দেয়। তুহিন মোবাইল বের করে ভিডিও করতে থাকে। পরে আর ওকে দেখতে পাইনি। পরে জানতে পারি, ওই দোকানে তাকে কুপানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।”
বাসন থানার ওসি শাহীন খান বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। আশা করছি, দ্রুত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারব। ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনিদের ধরতে অভিযান চলছে।”
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, “তাৎক্ষণিক তদন্তে জানতে পেরেছি, নারীঘটিত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদশা মিয়া নামের একজনকে কোপাতে আসে একদল ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসী। এ ঘটনার ভিডিও করায় সাংবাদিক তুহিনকে তারা লক্ষ্যবস্তু বানায়। একপর্যায়ে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। সিসিটিভি ফুটেজেও বিষয়টির প্রমাণ মিলেছে।”