স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার তালাইমারি মোড়ে জাল টাকাসহ জনতার হাতে আটক হয়েছে ভুয়া সাংবাদিক শুকুর রানা ওরফে এমএস রানা। এ নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে (ফেসবুকে) একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়।
শনিবার রাত আনুমানিক ১১ টার সময় তালাইমারি মোড়ে চান্দু মিয়ার চায়ের দোকানে চা খেয়ে বিল পরিশোধ করে জাল টাকা দিয়ে, সেই সময় চায়ের দোকানিসহ স্থানীয় জনগন রানাকে তার কাছে থাকা আরও কিছু জাল নোট সহ আটক করে মতিহার থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। আটকের সময় রানার কাছে ১০০০ টাকার ২ টি ৫০০ টাকার ৩ টি ২০০ টাকার ৩ টিসহ মোট ৪১০০ জাল টাকা পাওয়া যায়।
চায়ের দোকানদারের বক্তব্যনুযায়ী রানা এর আগেও চা-নাস্তা করে জাল টাকা দিয়েছে। সেই থেকে চায়ের দোকানদার রানার বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিলো। গতকালও রানা দোকানে জাল টাকা দিয়ে বিল পরিশোধ করার সময় দোকানদার তাকে হাতেনাতে ধরে।
আটকের সময় রানার কাছে একটি আর ওয়ান ফাইভ মোটরসাইকেল ও একটি সাংবাদিক আইডি কার্ডও উদ্ধার করে।
শুকুর রানা ওরফে এমএস রানা ওরফে রানা আহম্মেদ ওরফে রানার বিরুদ্ধে রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে রানা সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশাকে পুঁজি করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।
আটকের সময় উদ্ধারকৃত সাংবাদিক কার্ড নিয়ে উক্ত নিউজ পোর্টালের সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সেই সময় নির্বাহী সম্পাদক কার্ডটি দিয়ে থাকতে পারে তবে বিগত ৫/৬ বছর যাবৎ রাজশাহীতে আমাদের এমএস রানা নামের কোন সাংবাদিক নাই।” তিনি আরও বলেন, “সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে যারা অপরাধের সাথে জড়িত তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা উচিত।”
জাল টাকাসহ সাংবাদিকের গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে নগরীতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয় এতে সাংবাদিকদের প্রতি সাধারন মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব পরে।
শুকুর রানার অপরাধমুলক কর্মকান্ড নিয়ে রাজশাহী অনলাইন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ফায়সাল হোসেন বলেন, “শুকুর রানা সাংবাদিক এটা গতকালই জানতে পারি, তাকে কোনদিন সাংবাদিকতা করতে দেখিনি তবে তার বিষয়ে যতটা জানলাম তাতে শুকুর রানাকে সাংবাদিক হিসেবে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করলাম। ভবিষ্যতে সে যেন রাজশাহীতে সাংবাদিক পরিচয় না দিতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
জাল টাকাসহ আটকের বিষয়ে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন,“শুকুর রানা নামের একজনকে ৪১০০ টাকার বিভিন্ন জাল নোটসহ স্থানীয় জনগন আটক করে সেই সময় তার কাছে আর ওয়ান ফাইভ মোটরসাইকেল ও একটি সাংবাদিক আইডি কার্ড পাওয়া যায়, আমরা তাকে জাল টাকা রাখার অপরাধে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করি।”
উল্লেখ শুকুর রানা ওরফে এমএস রানা ওরফে রানা আহম্মেদ ওরফে রানা চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। বর্তমানে শাহমুখদুম থানার বনলতা আবাসিকে বসবাস করে। ছাগল চুরির অভিযোগ থেকে শুরু করে নারী নির্যাতন একাধিক বিয়ে করে বউদের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ, অসামাজিক কার্যকলাপ, নিজের বাসায় দেহব্যবসা করার সময় খদ্দেরসহ তার তৎকালীন বউসহ ৪ জন নারী আটক, ব্ল্যাকমেইল করাসহ হেন কোন অপরাধ নাই যা সে করেনি।