শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে জানাজা হবে গোলাম আরিফ টিপুর

অনলাইন ডেস্ক : ভাষাসৈনিক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর (৯৪) জানাজা হবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জানা গেছে, ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি ইদগাঁ মাঠে আনা হবে। সেখানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার লক্ষ্যে শিবগঞ্জে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী কলেজ চত্বরে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কবিকুঞ্জের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক বলেন, পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিয়ে আসা হবে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১২টায় মরদেহ নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি ইদগাঁ মাঠে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী কলেজ চত্বরে চতুর্থ জানাজা হবে। এরপর রাজশাহী থেকে নিয়ে গিয়ে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হবে।

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু আর নেই
গোলাম আরিফ টিপু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান।

গোলাম আরিফ টিপু ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের (তৎকালীন মালদহ জেলা, ব্রিটিশ ভারত) শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে টিপু দ্বিতীয়। তিনি কালিয়াচর বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক ও রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। একই কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক। ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষার আন্দোলন মূলত তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

গোলাম আরিফ টিপু ১৯৫৮ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একাধিকবার রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত নীহারবানু হত্যা মামলায় তিনি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। ৯০ এর দশকের পূর্বে কিছু সময় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সঙ্গে রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন তিনি।

সর্বাধিক পঠিত