অনলাইন ডেস্ক : অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ইসরায়েলের বিপক্ষে খেলতে নামার কথা আগেই জানিয়েছিল নরওয়ে ফুটবল ফেডারেশন। এমনকি এই ম্যাচের টিকিট থেকে প্রাপ্ত আয় তারা ফিলিস্তিনের মানবিক খাতে অনুদানেরও ঘোষণা দিয়েছিল। ম্যাচজুড়েও দর্শকদের মাঝে ছিল প্রতিবাদী আবহ। তারই মাঝে রেকর্ডরাঙা হ্যাটট্রিক করেছেন নরওয়ের পোস্টারবয় আর্লিং হালান্ড। যার সুবাদে ইসরায়েল ৫-০ ব্যবধানে উড়ে গেছে।
ঘরের মাঠ অসলোর উলেভাল স্টেডিয়ামে ইসরায়েলকে আতিথ্য দিতে নেমে দাপুটে পারফর্ম করেছে নরওয়ে। ৫৫ শতাংশ বলের দখল রেখে তারা ১৬টি শট নেয়, যার ৫টি লক্ষ্যে ছিল। বিপরীতে ৪টি শট নিয়ে একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে ইসরায়েল। যদিও তারা কোনো গোল পায়নি। স্বাগতিক নরওয়ের পক্ষে হালান্ড হ্যাটট্রিক করেছেন, বাকি দুটি গোল এসেছে ইসরায়েলি ফুটবলারদের আত্মঘাতি অবদানে।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলের লিড পেয়েছিল নরওয়ে। যার শুরু ও শেষটা ইসরায়েলের আনান খলাইলি ও আদান নাকমার আত্মঘাতি গোল। মাঝে ২৭ মিনিটে ম্যাচে প্রথমবার স্কোরশিটে নাম তোলেন হালান্ড। বিরতির পর ৬৩ ও ৭২ মিনিটে তিনি চূড়ান্ত পেরেক ঠোকেন। পাশাপাশি পূর্ণ করেন জাতীয় দলের হয়ে নিজের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এ ছাড়া টানা ১০ ম্যাচেই গোল করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির এই তারকা ফরোয়ার্ড। অবশ্য ম্যাচে তার গোলসংখ্যা আরও বাড়তে পারত। তার নেওয়া পেনাল্টি দু’বারই ঠেকিয়ে দেন ইসরায়েলের গোলরক্ষক।
এ ছাড়া নিজের দ্বিতীয় গোলের পরই নরওয়ের হয়ে ৫০তম গোলের মাইফলক পূর্ণ করেছেন হালান্ড। এই কীর্তিতে মাত্র ২৫ বছর বয়সী এই তারকা সবচেয়ে দ্রুততম। চলমান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ৬ ম্যাচে ১২ গোল করেছেন হালান্ড। জাতীয় দলের হয়ে সবমিলিয়ে ৪৬ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ৫১। পরিসংখ্যানভিত্তিক সংস্থা অপ্টার তথ্যমতে– এতদিন আন্তর্জাতিক ফুটবলে দ্রুততম ৫০ গোলের রেকর্ডটি ছিল ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইনের (৭১)। তারচেয়ে ২৫ ম্যাচ কম খেলে অনন্য রেকর্ড গড়লেন হালান্ড। এ ছাড়া ৭৪ ম্যাচে ৫০ গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র।
সমান ৯০ ম্যাচে গোলের ফিফটি করেছেন ফ্রান্স অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে ও পোল্যান্ডের তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভান্ডফস্কি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি ১০৭ এবং পেশাদার ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ৫০ গোল পেতে লেগেছে ১০৯ ম্যাচ।
এদিকে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এ নিয়ে খেলা ৬ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে নরওয়ে। ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ‘আই’ গ্রুপের শীর্ষে হালান্ডের দল। এই ম্যাচটি আনন্দ দ্বিগুণ করেছে খেলা শুরুর আগে থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে জড়ো হওয়া প্রো-প্যালেস্টিনিয়ান বিক্ষোভরতদের। নরওয়ের সরকারি সম্প্রচারকারী গণমাধ্যম এনআরকে বলছে, এক হাজার মানুষ ইসরায়েলে বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।
এ ছাড়া মাঠে ‘শিশুদের বাঁচতে দাও’ স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও ‘ফ্রি গাজা’ লেখা টি-শার্ট পরে দর্শকরা উপস্থিত হন গ্যালারিতে। ২২-২৩ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারি পুরো ভর্তি ছিল, যদিও ৩ হাজার দর্শকের আসন ফাঁকা রেখে সামনে বসানো হয় ইসরায়েলি ভক্তদের। যেকোনো উপায়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রশাসনের ওই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।