নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। ভোর ৫:৪২। ১৪ মে, ২০২৫।

ACL : ফুটবলারদের আতঙ্ক যে ইনজুরি!

আগস্ট ২১, ২০২৩ ১:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অনলাইন ডেস্কঃ নতুন মৌসুমের শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহও পেরোয়নি। এরইমাঝে শোনা গিয়েছে বেশকিছু ইনজুরির খবর। যার মাঝে প্রায় বেশিরভাগই ACL বা অ্যান্টেরিওর ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট এর ইনজুরি। রিয়াল মাদ্রিদে গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া এবং ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও, অ্যাস্টন ভিলায় ডিফেন্ডার ট্রায়োনে মিঙস, চেলসিতে ক্রিস্টোফার এনকুনকু, আর্সেনালে জুরিয়েন টিম্বার এই ইনজুরির কারণে প্রায় মাস ছয়েকের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন।

সর্বশেষ যার শিকার হলেন অ্যাস্টন ভিলারই আরেক তারকা ফিলিপে কৌতিনিয়ো। রোববার এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচে ৮৫ মিনিটে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। পরে জানা যায়, সতীর্থ মিঙসের মতোই এসিএলের ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।

মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই এসিএল আক্রান্ত মিলিতাও

ফুটবলে একবারেই পরিচিত এক ইনজুরি এই ACL বা অ্যান্টেরিওর ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট। এর আগে বহু ফুটবলারের ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে গিয়েছিল এই ইনজুরির ফাঁদে। আবার লিভারপুলের ভার্জিল ভ্যান ডাইকের মত অনেকেই হারিয়েছেন নিজে

এসিএল কি?
এসিএল এর পূর্ণরূপ থেকেই জানা যায় এটি একপ্রকার লিগামেন্ট। লিগামেন্টের কাজ হল দুই বা আরও বেশি হাড়ে মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। একইসঙ্গে এটি হাড়ের বিভিন্ন নড়ন-চড়নের কাজেও বড় রকমের ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুনঃ  শ্রীলঙ্কায় সিরিজ জিতে দেশে ফিরলেন তামিম-জাওয়াদরা

দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সংযোগ ‘নি (knee) জয়েন্ট’ বা হাঁটুর জোড়া। এই এক জোড়ার মাঝেই আছে ৩ টি হাড়। থাইয়ের ফিমার, পায়ের টিবিয়া এবং হাঁটুর সামনের অংশে ঢাকনার মত প্যাটেলা যুক্ত থাকে এখানে। আর এর সবই সংযুক্ত থাকে অ্যান্টেরিওর ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট এর মাধ্যমে। যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘এসিএল।’

এসিএল এর চিড়
নি জয়েন্টে লিগামেন্ট থাকায় তাই হাঁটু সবসময়ই সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু ধারণক্ষমতার বাইরে অর্থাৎ পা বেশি সংকুচিত বা প্রসারিত করলে সেই চাপ পড়ে হাঁটুতে। আর তাতেই লিগামেন্ট, টেন্ডন ছিঁড়ে পা তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

ফুটবলারদের কেন এসিএল আক্রান্তের হার বেশি?
ফুটবল এমনই এক খেলা যেখানে বিশ্রামের সুযোগ নেই বললেই চলে। ৯০ মিনিয়ের পুরোটা সময় নিজের পায়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারই করতে হয় খেলোয়াড়দের। দৌড়ানোর অবস্থায় হঠাৎ থেমে যাওয়া, চোখের পলকে দিক পরিবর্তন, অকস্মাৎ খেলা থামানো বা শুরু করার মত কাজ করতে হয় প্রতিনিয়ত। এসবের কারণে যেকোনো সময় হাঁটুর লিগামেন্টে জোর চাপ লাগতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল

জুরিয়েন টিম্বার
এছাড়া শূন্যে লাফ দেওয়ার বিষয়টি তো আছেই। বেশিরভাগ সময়েই লাফ দেওয়ার পর ল্যান্ডিং ঠিকঠাক না হলে এসিএলে চিড় ধরতে পারে। এছাড়াও ক্রমাগত ট্যাকলের শিকার হন ফুটবলাররা। এসব কারণে হাঁটুর সেই সংযোগস্থল আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক না।

দুর্ঘটনার মাত্রার ওপর ভিত্তি করে এসিএল ‘আংশিক’ বা ‘সম্পূর্ণ’ ছিঁড়তে পারে। তবে একে পুরোপুরি আটকে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। সাবধানতাই একমাত্র পথ। কিন্তু খেলাটা যখন ফুটবল, আর প্রশ্নটা যখন গতি নিয়ে, তখন সেই সাবধানতা অবলম্বন করাও কষ্টকর। আর তার ফলাফল এসিএল ইনজুরি।

এসিএল এর চিকিৎসা এই ইনজুরির পরেই ছন্দ হারিয়েছেন ভ্যান ডাইক
ACL এর আংশিক বা পূর্ণ চিড় নিশ্চিত হওয়ার পর ফিজিশিয়নরা জরুরি ভিত্তিতে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি পালন করেন

আরও পড়ুনঃ  শরীর চললে ধোনির আইপিএলও চলবে!

বিশ্রামের মাধ্যমে হাঁটুর জয়েন্ট স্বাভাবিক করার চেষ্টা
বরফ ব্যবহার
হালকা ধরণের ম্যাসাজ যেমন
ব্যাথা ও ফোলা কমাতে অ্যাসপিরিন দেয়া
মূলত এসবের পরেই এরপরেই ইনজুরির মাত্রা অনুযায়ী সার্জারি লাগবে কি না ঠিক করা হয়। যদিও সম্পূর্ণ এসিএল ছিড়ে গেলে তখন সার্জারির বিকল্প নেই।

পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় আছেন রিয়াল মাদ্রিদের থিবো কর্তোয়া
সার্জারির পরের রিহ্যাবই এই ইনজুরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। রিহ্যাব ঠিকমতো না হলে পায়ের ফাংশন চলে যেতে পারে, যার কারণে শেষ হয়ে যেতে পারে চিরতরে। আধুনিক চিকিত্‍সা বিজ্ঞানের কল্যাণে অনেক ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার হার কমে এসেছে। কিন্তু এই ইনজুরিতে দ্রুত সুস্থ করার কোন পদ্ধতিই আজও আবিষ্কার করা যায়নি। এসিএল আক্রান্ত খেলোয়াড়দের মাঠে ফিরতে তাই ৬ থেকে ৮ মাস কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে পুরো মৌসুম সময় লাগতে পারে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।