নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শুক্রবার। রাত ৮:৩৭। ২১ নভেম্বর, ২০২৫।

জয়পুরহাটে জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো অবৈধ সম্পদ অর্জনের ঘটনা

নভেম্বর ২১, ২০২৫ ৮:১৩
Link Copied!

এম.এ. জলিল রানা,জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো অবৈধ সম্পদ অর্জনের ঘটনা। জমি নিয়ে আপন দুই ভাইয়ের দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে এবার বেড়িয়ে এসেছে এক ভাইয়ের অবৈধ সম্পদ অর্জনের ঘটনা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে মিলেছে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তথ্য। আদালতের নির্দেশে ইতোমধ্যেই এক একরের বেশি সম্পদ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে ।

জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের কানুপুর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে । গ্রামের দুই ভাই ফজলুর রহমান ও শফিউল আলমের পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ থাকার অভিযোগ পায় দুদক, এর ভিত্তিতে দুদকের অনুসন্ধানে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায় দুদক। এরপর দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী বাদী হয়ে গত বছর তার বিরুদ্ধে মামলা করেন আদালতে । আদালত ওই স্থাবর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) রিসিভার হিসেবে দেন। আদালতের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ইউএনও ফজলুর রহমানের ৩ বিঘা ২৫ শতাংশ ফসলি জমির দখল বুঝে নেন।

অভিযুক্ত ফজলুর রহমান যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক্সামিনার অব অ্যাকাউন্টস পদে কর্মরত ছিলেন এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে অবসরে যান। তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান।

দুদকের সমন্বিত নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মেহেবুবা খাতুন বলেন, চাকরিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ফজলুর রহমান ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি এবং ৮০ লাখ ১৫ হাজার ২৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক থেকে মামলা করা হয়েছে আদালতে।

তিনি আরও বলেন, আদালত ফজলুর রহমানের হেফাজতে থাকা জয়পুরহাট শহরের সরদারপাড়া মহল্লার ৬ শতাংশের একটি বাড়ি এবং আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর গ্রামের ৩ বিঘা ২৫ শতক আবাদি সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে ও উপস্থিতিতে ইউএনও কানুপুর মাঠের জমিগুলোর দখল বুঝে নিয়েছেন। মামলার চার্জশিট অনুমোদন হলে তা আদালতে দাখিল করা হবে।

আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবিদা খানম বৈশাখী (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ফজলুর রহমানের ৩ বিঘা ২৫ শতক জমির দখল বুঝে নিয়ে লাল ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। তবে জয়পুরহাট সদরে থাকা ৬ শতাংশের বাসাটি তার এখতিয়ারভুক্ত নয় বলে সেটির দখল নেওয়া হয়নি।

এদিকে ফজলুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, তার সব সম্পদই বৈধ এবং আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ভুলক্রমে জমিগুলো ফাইলে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বড় ভাই শফিউল আলমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলায় সুযোগ বুঝে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যেই এসব করা হয়েছে।

অন্যদিকে বড় ভাই শফিউল আলম জমি নিয়ে বিরোধের কথা স্বীকার করলেও দুদকে অভিযোগ করার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ছোট ভাইয়ের সাথে জমি–জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে এটি সত্য। তবে তার পরিবারের কেউ দুদকে অভিযোগ করেনি। দুদক নিজস্ব অনুসন্ধানেই ফজলুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।