নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার। বিকাল ৩:৪৪। ৬ নভেম্বর, ২০২৫।

ফুরফুরে মেজাজে লিটন

জুন ১৪, ২০২৩ ১১:২৫
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরে দাঁড়ানোর কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের জয়ে আর কোন বাঁধাই থাকল না। তাঁর জয় এখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। রাজশাহীর ভোটাররা এমনই মনে করছেন।

দলীয় নেতারাই বলছেন, ‘আওয়ামী লীগ বিরোধী’ হিসেবে ভোটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুরশিদ আলমই একটু ভোট পেতেন। মুরশিদ আলম অপরিচিত হলেও তাঁকেই ধরা হচ্ছিল লিটনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। লিটনও একাধিক সভা-সমাবেশে ঘুরেফিরে হাতপাখার বিষয়েই সতর্ক থাকার কথা বলছিলেন। অন্য দুই প্রার্থীর কারও সম্পর্কে কোন কথা বলেননি লিটন। এখন হাতপাখা নির্বাচনে না থাকায় ফাঁকা মাঠেই গোল দিতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লিটন। তাই ফুরফুরে মেজাজে তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘আশা করেছিলাম বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ভোট হবে। কিন্তু বিএনপি তো আগেই ঘোষণা দিয়ে আসেনি। আর হাতপাখা নির্বাচনে আসায় ভোটের আবহ বেশ ভালই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তারা বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় খানিকটা তো ক্ষুণ্ন হলোই। তিনি বলেন, ‘তাদের নির্বাচন করার মানসিকতা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা উচিত ছিল। কেন সরে গেল সেটা তারাই বলতে পারবে। তারা নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের মার্কা তো থেকেই যাচ্ছে। কাজেই তাদের মার্কাতে যারা ভোট দেওয়ার তারা দেবে।’

এর আগে ২০০৮ ও ২০১৮ সালে শহরের মেয়র নির্বাচিত হন লিটন। পরাজিত হন ২০১৩ সালে। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েই মাঠে নেমে পড়েন তিনি। নানা কায়দায় প্রায় দু’মাস ধরে তিনি মাঠ দখলে রেখেছেন। নির্বাচনে বিএনপি না আসায় নির্ভার ছিলেন লিটন। জয়ের ব্যাপারে শতভাত আশাবাদী থাকলেও হাতপাখা তাকে স্বস্তিতে রাখেনি। যদিও গত ২ জুন প্রতীক বরাদ্দ হলেও প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়ার মতো ছিল না ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী মুরিশদ আলমের। পোস্টার-ফেস্টুন তেমন ছিল না। মাইকিংয়েও ছিলেন পিছিয়ে। তবে সশরীরে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার চেষ্টা ছিল তাঁর। বিভিন্ন জেলা থেকেও ইসলামী আন্দোলনের নেতার্মীরা নির্বাচনীকাজে অংশ নিতে রাজশাহীতে ছুটে আসেন।

এদিকে বিএনপি-জামায়াত ভোটের মাঠে না থাকায় নৌকার বিরোধীশক্তি হিসেবে ভোটারদের কাছে পরিচিতি পায় হাতপাখা। রংপুর ও গাজীপুর সিটির ফলাফল দেখে রাজশাহীতেও তুমুল আশাবাদী ছিলেন দলটির নেতারা। নৌকার প্রার্থী লিটনের সাথে হাতপাখার মুরশিদ আলমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে বলেও ভোটারদের মাঝে জোর গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু ভোটের মাত্র এক সপ্তাহ আগে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে রাজশাহী সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা মুরশিদ আলম। গত সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে ডেকে তিনি এই সিদ্ধান্তে কথা জানান।

হাতপাখা সরে দাঁড়ানোই নৌকার পালে বিজয়ের হাওয়া লেগে গেছে। ঘাম না ঝরিয়েই জয় পেতে যাচ্ছেন লিটন। তার বিজয়ী হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। কারণ এখন লিটনের সামনে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই নেই। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম অনেক পিছিয়ে। শহরে তার কোনো পোস্টার ফেস্টুন বা মাইকিংও চোখে পড়ছে না ভোটারদের। দলের ভেতরে নানা লবিং-গ্রপিংয়ের দুর্বল হয়ে পড়েছেন স্বপন। নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে নামাতে পারছেন না। দলে চেইন অব কমান্ড নেই। পোস্টার টাঙানোর মত কর্মীই পাচ্ছেন না তিনি। ফলে ভোটের মাঠে লাঙ্গল নিয়ে কোনো আলোচনাই নেই।

একই অবস্থা জাকের পার্টি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী লতিফ আনোয়ারেরও। শহরে তারও পোস্টার ফেস্টুন নেই। মাইকিংয়ে দলীয় প্রতীক গোলাপ ফুলের আওয়াজও তুলতে পারেননি তিনি। প্রচার-প্রচারণা চালানোর মতো জাকের পার্টির নেতাকর্মীও নেই। জাপা ও জাকের পার্টির মেয়রপ্রার্থী ব্যক্তি ইমেজও নেই রাজশাহীতে। ফলে গায়ে হাওয়া লেগেছে লিটনের।

সিটি নির্বাচন পরিস্থিতির ওপর নাজর রাখছেন সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত কুমার পাল। তিনি বলেন, বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থীর ওপর হামলার পর সিইসি যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা শিষ্টাচারবহির্ভূত। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। কিন্ত তাদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন থোলার সুযোগ আছে। রাজশাহীতেও তারা সকল প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ধরেই নিয়েছেন, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তিনি অন্যান্য প্রার্থীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন যেভাবে আটরণবিধি ভঙ্গে উৎনবে চলেছে তাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এটি দুঃখজনক।’

তবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিলেই ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে কমিশন আইনী ব্যবস্থা নিচ্ছে। পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয়নি।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।