স্টাফ রিপোর্টার : জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর খাদ্য ব্যবস্থা পাল্টাও, সবুজ জ্বালানি নির্ভর খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোল এই দাবিতে জনসমাবেশ অনুষ্টিত হয়। বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর সকাল ১১ ঘটিকায় রাজশাহীর লালনশাহ মুক্ত মঞ্জে WE THE 99 , Fight Inequality Alliance (FIA), উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’র আয়োজনে গ্লোবাল রেড ক্যাম্পেইন এর অংশ হিসেবে জনসমাবেশে তরুণ-যুবসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বলা হয়, সারা বিশ্বের মধ্যে জি ২০ দেশগুলোর মানুষ ১% বাকী সবাই ৯৯%। কিন্তু এই ১% সারাবিশ্বের ৯৯% মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিবেশবিনাশী কার্যক্রম চালিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতি, সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করেন জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর খাদ্য ব্যবস্থা পরিবর্তন করে একটি সবুজ, টেকসই ও মানুষসহ অন্যনান্য প্রাণবৈচিত্র্য ভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশে WE THE 99 পক্ষ হতে আগামীতে জি ২০ সম্মেলনে বৈষম্য ও জলবায়ু ন্যায়ের প্রতি খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চল হতে বাংলাদেশের পক্ষে আহ্বান জানান হয়।
সমাবেশের খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চল ও বাংলাদেশের পক্ষে ধারণাপত্র পাঠ করেন বারসিকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো: শহিদুল ইসলাম। তিনি বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনসহ ধনী দেশেগুলোর জি ২০ সম্মেলনে খাদ্য ও শক্তি ব্যবস্থার ওপর বর্তমান সমস্যা এবং পরিবেশ বান্ধব, সমতাভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থার বিকল্প সমাধান নিয়ে আলোচনা ও দাবি করবেন। তিনি গ্লোবাল ফাইট ইনইকুয়ালিটি অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে বলেন যে, খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় জ্বালানি ব্যবহার ও অসাম্য নির্মূল করা আমাদের সময়ের এক জরুরি চ্যালেঞ্জ। এই সমাবেশে তরুণ-যুব, কৃষক, পরিবেশবিদ, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং স্থানীয় নানা পেশার অধিবাসীগণ অংশগ্রহণ করবেন।
সমাবেবেশে সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন কর্মী ওয়ারিউর রহমান বলেন- দিনে দিনে আমাদের প্রকৃতিকে বিনষ্ট করা হচ্ছে, আমাদের সংস্কৃতি ও খাদ্য ব্যবস্থা আমাদের মতো হওয়া দরকার।
বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল বলেন, যুবদের পক্ষে আমাদের দাবি আগামীতে একটি নিরাপদ পৃথিবী, যেখানে মানুষসহ সকল জীববৈচিত্র্য সুন্দরভাবে বেঁবে থাকবে। আদাবসী যুব নারী সাবিত্রী হেব্রম বলেন- জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে আদিবাসীদের খাদ্য ব্যবস্থা এবং অধিকার সংকোচিত হচ্ছে, ধনী দেশগুলোকে এর ক্ষতিপুরণ দিতে হবে।
যুব পরিবেশ কর্মী মো. হাসিবুল হাসনাত রিজভি বলেন, উন্নত দেশগুলোর পরিকল্পনার কারনে আমাদের মতো দেশগুলোর ক্ষতি হয়, তা বন্ধ করতে হবে।
সমাবেশে গ্লোবাল ফাইট ইনইকুয়ালিটি অ্যালায়েন্সের রাজশাহীর যুব সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিক ৬ দাবি সম্মিলিত দাবি নামা পেশ করেন। তিনি বলেন আগামী জি ২০ সম্মেলনসহ জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ( কপ ৩০) তে নিম্নলিখিত দাবিগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দাবিসমূহ:
১.জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভর খাদ্য উৎপাদন বন্ধ করতে হবে এবং নেতিবাচক প্রভাব বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২.সবুজ জ্বালানি ও টেকসই কৃষি পদ্ধতির বিকল্প চালু করতে হবে।
৩.ক্ষুদ্র ও স্থানীয় কৃষকদের ক্ষমতায়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
৪.পরিবেশবান্ধব নীতি ও সমতাভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থার প্রচার ও উদ্যোগ নিতে হবে।
৫.আসছে আগামী এ২০ সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি ভর্তুকি কমাতে হবে ও সবুজ জ্বালানি ও টেকসই পদ্ধতির নীতি গ্রহণ করতে হবে।
৬.”WE THE 99″ বৈশ্বিক ৯৯% জনগণের ন্যায্যতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধনী দেশগুলোকে কাজ করতে হবে।