অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ‘কিছু সময়ের জন্য’ শাসন করতে পারে ইসরায়েল। ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে আনার বিরোধিতাও করেছেন তিনি।
বুধবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) ফিরিয়ে আনার বিষয়ে স্পষ্ট বিরোধিতা জানিয়ে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ইসরায়েল কিছু সময়ের জন্য গাজা শাসন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সফরসঙ্গী ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ইসরায়েলি ওয়ালা নিউজ পোর্টাল জানায়, “গাজায় দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার জন্য একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রয়োজন। সম্ভবত আমরা কিছু সময়ের জন্য সেখানে থাকব।”
তিনি আরও বলেন, “এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। যদি প্রথম পর্যায়ে আমরা সেখানে না থাকি, তাহলে আর কাউকে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।”
ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, “গাজায় শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে ফিলিস্তিনিরাই, কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয়।”
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান যুদ্ধের লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক শক্তি ধ্বংস এবং তাদের ক্ষমতা থেকে সরানো। তবে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে রামাল্লাহ-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজার শাসনভার দেওয়া হবে না বলে তারা জানিয়ে দিয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় আরব দেশগুলোর নেতৃত্বে একটি যৌথ আন্তর্জাতিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছে তেলআবিব। ওই কর্মকর্তা বলেন, “যুদ্ধ শেষ করার প্রধান শর্ত হলো — গাজায় হামাস থাকবে না, গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং এর নেতৃত্বকে বহিষ্কার করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্য একটি শক্তি সেখানে নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং অস্ত্রের ব্যবহার রোধ করবে”। তবে সে ‘অন্য শক্তি’ কারা, তা তিনি জানাননি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৭ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ইসরায়েল বর্তমানে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি হয়েছে।