ঢাকা সকাল ১০:১০। বুধবার ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
  1. অপরাধ
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. আরো
  6. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  7. কবিতা
  8. কলাম
  9. কোভিড-১৯
  10. খুলনা
  11. খেলা
  12. চট্টগ্রাম
  13. চাকুরী
  14. চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  15. জয়পুরহাট
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আইসিটি খাত: ২০২৪ সালের চ্যালেঞ্জ ও ২০২৫ সালের প্রত্যাশা

Somoyer Kotha
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫ ৪:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সৈয়দ আলমাস কবীর
২০২৪ সালে বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা থেকে শুরু করে সাইবার অ্যাটাক, উপাত্ত চুরি, হাইটেক পার্কে অনিয়ম ইত্যাদি সমস্যায় জর্জরিত ছিল এই খাত। গত ১৫ বছরে আইসিটি খাতে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও এর সিংহভাগই অপচয় হয়েছে দুর্নীতির কারণে। এর মধ্যে কিছু ইচ্ছাকৃত এবং কিছু ছিল অপরিকল্পিত প্রকল্পের কারণে।
gnews দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

সরকারি দপ্তর ও প্রকল্পগুলোতে যে আইসিটিবিষয়ক বরাদ্দ থাকে, তার একটা মোটা অংশ রাখা হয় হার্ডওয়্যার কেনার জন্য। সফটওয়্যার ও পরিষেবার জন্য খুব সামান্যই বরাদ্দ থাকে। বাংলাদেশে যেহেতু হার্ডওয়্যার তৈরি হয়না, সেহেতু এই বরাদ্দের প্রায় সব অর্থই বিদেশে চলে যায়। বড় বড় প্রকল্পে কেনা হার্ডওয়্যারগুলো বাংলাদেশে সংযোজন করার শর্ত আরোপ করা উচিৎ ছিল। মেট্রোরেল, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্র, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে যে কম্পিউটার, প্রিন্টার, নেটওয়ার্কিং যন্ত্রাংশ, টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, কিয়স্ক ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে, তা’ আমদানি না করে যদি হাইটেক পার্কগুলোতে সংযোজন করা হতো, তাহলে অর্থের একটা অংশ দেশেই থেকে যেত এবং একই সঙ্গে টেকনোলজি ও স্কিল ট্রান্সফার হতে পারতো। ফলে প্রশিক্ষিত হয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারতো এবং বাংলাদেশের নিজস্ব হার্ডওয়্যার শিল্পের বিকাশ ঘটতো।

সরকারি বাজেটে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়নি। যার ফলে দেশীয় আইটি কোম্পানিগুলোর বিকাশ হয়নি। সফটওয়্যার রক্ষনাবেক্ষণের জন্যও তেমন বরাদ্দ না থাকায় প্রকল্পগুলোকে টেকসই করা যায়নি। সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রতি দেশীয় কোর-ব্যাংকিং সফটওয়্যার ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও তা পালন করেনি ব্যাংকগুলো। ফলে কোটি কোটি টাকা বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো নিয়ে গেছে এবং দেশীয় কোম্পানিগুলো পৃষ্ঠপোষোকতার অভাবে বড় হতে পারেনি।

প্রকৃত আইটি কোম্পানিগুলোর পরিবর্তে রাজনৈতিক নেতাদের ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি টেন্ডার পেয়ে নিম্নমানের কাজ করেছে, যা বেশিদিন টেকেনি। অনেক সময়ই এমন হয়েছে যে, টাকা নিয়ে গেলেও কাজের হদিস পাওয়া যায়নি। হাইটেক পার্কের জায়গা নির্ধারনে ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে আলোচনা না করে অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো ইকোসিস্টেম না থাকা স্বত্তেও এই জায়গাগুলো নির্ধারন করা হয়েছে স্থানীয় এমপি বা মন্ত্রীর তদবিরে। ফলে পার্কগুলোতে বিনিয়োগ করেনি আইটি কোম্পানিগুলো।

কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের প্রজেক্ট করা হয়েছিল দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে। সেখানেও মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ম হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রদানে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতিষ্ঠানকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে নামমাত্র প্রশিক্ষণ দিয়েই টাকা নিয়ে গেছে তারা। নিরীক্ষাবিহীন এসব ট্রেনিং প্রকল্পে শুধু যে অর্থ ব্যায়ই হয়েছে তা নয়, তরুণ প্রজন্ম উপযুক্ত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি।

২০২৪ সালের কলঙ্কিত ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল। প্রায় দুই সপ্তাহ ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাসহ পুরো এফ-কমার্স খাতে ১,৭৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিদেশি ক্লায়েন্টদের চুক্তি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় অর্ডার বাতিল, নেতিবাচক রিভিউ এবং র‍্যাঙ্কিং হারানোর মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় ভুগতে হয়েছে দেশের ফ্রিল্যান্সার, আইটি ও বিপিও কোম্পানিগুলোকে। এর প্রভাব শুধু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ না থেকে আন্তর্জাতিক ইমেজেও নেতিবাচক ছাপ ফেলেছে। সফটওয়্যার রপ্তানি খাতে ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের আস্থা হারানোর ফলে জব মার্কেটেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা বড় একটি সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছিল এ বছর। প্রথম আলোসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সাইবার হামলার শিকার হয়েছে, যা দেশের তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর দুর্বলতা উন্মোচিত করেছে। Threat Intelligence Platform-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সাইবার আক্রমণের সংখ্যা বছরে ১০৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও, ব্যাংকিং খাতে বেড়ে চলা সাইবার আক্রমণ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং আস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।

এসব সমস্যা সমাধানে ২০২৫ সালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। বরাদ্দের অর্থের স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে প্রকৃত আইটি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে। সাইবার নিরাপত্তার জন্য একটি কেন্দ্রিয় কাঠামো তৈরি করে সাইবার নিরাপত্তায় দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে হবে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণমূলক প্রজেক্টে নিয়মিত অডিট চালানো জরুরি। দক্ষতার ঘাটতি পূরণে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে উন্নত করতে হবে। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করা গেলে ইমেজ সংকট কাটিয়ে উঠে তথ্যপ্রযুক্তি খাত নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণ এবং নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমেও ডিজিটাল বিভাজন দূর করা সম্ভব।

বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষ পরিকল্পনা ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ খাতকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। ২০২৪ সালের শিক্ষা এবং চ্যালেঞ্জগুলো থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০২৫ সাল হতে পারে আইসিটি সেক্টরের জন্য একটি নতুন সূচনা।

লেখক: সাবেক সভাপতি, বেসিস
ইত্তেফাক

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০