• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে আরেক দফা

প্রকাশ: রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ২:৫১

মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে আরেক দফা

মোট জ্বালানি তেলের ৬৫ শতাংশ ব্যবহার হয় পরিবহণ ও ১৬ শতাংশ কৃষি খাতে। মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহণ ও কৃষি খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। অপরদিকে মূল্যস্ফীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চালের অবদান ৬০ শতাংশ।

আর পরিবহণ ও বাসস্থানের অনুপাত ১০ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি ও হ্রাসের ৭০ শতাংশই নির্ভর এ তিনটি পণ্য ও সেবার ওপর। ফলে শুক্রবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহণ সেবা ও কৃষি উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে আরেক দফা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। নিম্ন ও মধ্যম শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে।

অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ২০২২ সালে অগ্রসর অর্থনীতির দেশগুলোর গড় মূল্যস্ফীতি ৬.৬ শতাংশে উঠবে। এপ্রিলে যা ৫.৭ শতাংশ হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছিল।

মূল্যস্ফীতি আগের ধারণার চেয়েও বেশি সময় উচ্চমাত্রায় থাকবে। এছাড়া চলতি বছরে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৫ শতাংশ হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে, যা এপ্রিলে দেওয়া হয়েছিল ৮.৭ শতাংশ।

জানতে চাইলে বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক এমকে মুজেরি যুগান্তরকে জানান, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব সবকিছুর ওপর পড়বে। পরিবহণ খরচ ও পণ্যের দাম বাড়বে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে পুত্রবধূকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় শ্বশুর গ্রেপ্তার

ফলে আশঙ্কা অমূলক হবে না আগামী দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতির। তিনি আরও বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কয়েক দিন আগে সারের মূল্য বাড়ানো হয়। এতে কৃষিতে উৎপাদন খরচ বাড়বে।

বিশেষ করে বোরো মৌসুমে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি হবে। তবে মূল্য এত অস্বাভাবিক হারে না বাড়িয়ে অল্প হারে বাড়লে প্রভাব এত বেশি হতো না।

সার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি বড় ধরনের আঘাত করবে বোরো ধানের উৎপাদনকে। কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। পাশাপাশি পণ্যবাহী পরিবহণ ব্যয়ও বাড়বে। আরও মূল্যস্ফীতির ৬০ শতাংশ উঠানামা করে চালের মূল্যের ওপর নির্ভর করে।

ফলে সামনের দিনে এর বিরূপ প্রভাব মূল্যস্ফীতিতে পড়বে। এছাড়া পরিবহণ ভাড়া বাড়ানো হবে। সব ধরনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশের বেশি পরিবহণ ভাড়া প্রভাবিত করে। ফলে এক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাইতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে এ হার প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি।

আরও পড়ুনঃ  মেট্রোপলিটন ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

যদিও চলতি বাজেটে ৫ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে মূল্যস্ফীতির হার রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু জ্বালানি তেল ও সারের মূল্য বাড়ানো হয়েছে।

এছাড়া এবং সামনের দিনগুলোতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির আভাস সব মিলে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে থাকবে না। মূল্যস্ফীতি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মতে, সরকার মূল্যস্ফীতি হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ঘোষণা করলেও অর্থবছর শেষে এটি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে এমনটি ধরে নেওয়া হচ্ছে।

জীবনযাত্রায় মূল্যস্ফীতি যেভাবে প্রভাব ফেলে : ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে এমনিতে মূল্যস্ফীতির রের্কড সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। খাদ্য, পরিবহণ ও বাসস্থান এ তিনটি ছাড়া মানুষ চলতে পারে না।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতিটি খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে। বাড়বে পরিবহণ সেবার মূল্য এবং বাসস্থান ব্যয়ও। সব মিলে মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়বে। এখনই ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি।

অর্থাৎ গত বছর একশ টাকায় যে পণ্য ও সেবা পাওয়া যেত বর্তমানে সেটি পেতে ১০৭.৪৮ টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে কোনো ব্যক্তি আগে এক হাজার টাকা ব্যয় করে ১০টি পণ্য ক্রয় করতে পারতেন। এখন এক হাজার টাকা ব্যয় করে ১০টি পণ্য কিনতে পারবেন না। এরচেয়ে কম কিনতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে নগরীতে মানববন্ধন

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সব উদ্যোগ অকার্যকর : চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাজেট ঘোষণা করা হয়। সরকারের ব্যয় কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে বাজেটে।

এবার বাজেটে ব্যয়ের অনুপাত জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়। এর আগের বাজেটের ব্যয়ের অনুপাত ছিল জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। একই ভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।

ডিসেম্বর পর্যন্ত যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে সেখানে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবাহের হার ছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বাজারে ঋণের অনুপাত টেনে অর্থ প্রবাহ কমিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এসব উদ্যোগের পর এখন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সব হিসাব-নিকাশ পালটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675