ঢাকা সকাল ৮:১৩। বুধবার ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
  1. অপরাধ
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. আরো
  6. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  7. কবিতা
  8. কলাম
  9. কোভিড-১৯
  10. খুলনা
  11. খেলা
  12. চট্টগ্রাম
  13. চাকুরী
  14. চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  15. জয়পুরহাট
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জয়পুরহাটে আলু চাষীদের হালচাল

Somoyer Kotha
জানুয়ারি ৩০, ২০২৫ ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এম.এ.জলিল রানা.জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে আলুচাষিদের হালচাল। উত্তরাঞ্চলের শষ্যভাণ্ডার খ্যাত,আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর,সীমান্তের কোল ঘেষা, ছোট্ট জেলা শহর জয়পুরহাট। হিমাগারে আলু রাখার সময় দাম ছিল ১৩-১৬ টাকা কেজি।আর হিমাগার থেকে বের করার সময় বীজ আলুর দাম এক লাফে ১০০ টাকায় পৌঁছায়। এতে করে আলু চাষীরা অবাক হলেও উপায় না থাকায় একদিকে চড়া দামেই কিনতে হয়েছে বীজ আলু। অন্যদিকে আলু রোপণের সময় চড়া মূল্য দিতে হয়েছে সারেও। সব মিলেমিশে খরচটা বেশি হওয়ায় বেশি দামে আলু বিক্রি করতে হবে এমনটায় আশা ছিল আলু চাষীদের। তবে সে আশাই গুড়ে বালি। আলু চাষাবাদে লাভ তো দূরের কথা,খরচ উঠানোর টানাপোড়নে রয়েছেন জেলার আলু চাষীরা। কারণ,এবার আগাম আলুর দাম বিগত বছরের তুলনায় কম। তাই ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। আলু রোপণ ও উত্তোলনে চাষীদের মুখে হাসি না থাকলেও কিছুটা হলেও স্বস্তি মেলাতে পারতো হিমাগারগুলো। কিন্তু এবার হিমাগারে আলু সংরক্ষণে সেখানেও গুণতে হবে চাষিদের বেশি টাকা।

আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর জয়পুরহাট জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষাবাদ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪০ হাজার হেক্টর।বিপরিতে চাষাবাদ হয়েছে ৪৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর। এরমধ্যে জেলার কালাই উপজেলায় ১০ হাজার ৯০৫ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার ২২০,পাঁচবিবিতে ৮ হাজার ৯৪৫, সদরে ৭ হাজার ৮০০ এবং জেলার আক্কেলপুর উপজেলাতে আলুর চাষাবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এ মৌসুমে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ৫৬ হাজার মে: টন।

৫ বছরের মধ্যে আলু চাষাবাদে রেকর্ড:
চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে আলু চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশী,গেল ৫বছরের মধ্যে এবার রেকর্ড করেছে। গেল ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি।কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ওই মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮৫ হেক্টর জমি কমে আলুর চাষাবদ হয়েছিল ৪০ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে। এতে করে আলু উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৭ মে: টন।২০২১-২২ মৌসুমে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার ৩৫০ ধরা হলেও ৭০ হেক্টর কম জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছিল। তবে ওই মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা দাড়িয়েছিল ৯ লাখ ২৮ হাজার ১২০ মে: টন। আবার ওই মৌসুমে আলুর উৎপাদন ভালো হলেও চাষিরা ২০২২-২৩ মৌসুমে আবার অন্যান্য ফসলের চাষ বাড়িয়ে দেন। ফলে ওই মৌসুমে কৃষি বিভাগ ৩৮ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষাবাদ হয়েছিল ৩৮ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। আর আলু উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ ২৩ হাজার ২০০ মে: টন।

বীজ আলুর আকাশছোঁয়া দাম আর সার কিনতে চড়া মূল্য গুনলেও এবার জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ৪৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে ২৭ জাতের। উৎপাদিত আলুর দাম গেল বছরের তুলনায় এবার কম হওয়ায় লাভের দেখা না পেলেও খরচ তোলার চিন্তায় এখন দিন কাটছে চাষীদের। এদিকে আলু সংরক্ষণেও মিলছে না স্বস্তি, এবার কেজিতে ১ টাকা বাড়িয়ে ৮ টাকা ভাড়া ধার্য করেছেন বিসিএসএ।
তবে ওই মৌসুমে চাষিরা আগাম ও ভরা মৌসুমে আলুর আশানুরুপ দাম না পাওয়ার কারণে গেল ২০২৩-২৪ মৌসুমে আলুর চাষাবাদ তেমনটা বাড়াননি। গেল ২০২৩-২৪ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর। ২০২২-২৩ মৌসুমের তুলনায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে চাষাবাদ ৮৫ হেক্টর জমিতে বাড়লেও সে হারে উৎপাদন বাড়েনি। গত মৌসুমের আগের বছরের তুলনায় ৮০ হাজার ১২৭ মে: টন আলুর উৎপাদন কমে আলু উৎপাদন হয়েছে, ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৩ মে: টন। ২০২৩-২৪ মৌসুমে উৎপাদন কম হওয়ায় মৌসুমের তুলনায় আগাম আলুর দাম বেড়ে যায়। আর আলু হিমাগারে সংরক্ষণের পর থেকেই দিন দিন আলুর দাম বারতেই থাকে। মূলত এ কারণেই গেল ৫ বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাবাদ আলু নহয়েছে।

এবার জেলায় ২৭ জাতের আলু চাষাবাদ:
সাধারণভাবে বাজারে পাকড়ী, গ্র্যানুলা, ডায়মন্ড,কার্ডিনাল, এস্টেরিক্স ও ক্যারেজ জাতের আলু বেশি পাওয়া গেলেও উফশী ও স্থানীয় জাত মিলে ২০২৪-২৫ চাষ মৌসুমে ২৭ জাতের আলু চাষাবাদ হয়েছে। জেলায় এবার আলুর উফশী ফসলের মধ্যে ১ হাজার ১৮৩ হেক্টর জমিতে কার্ডিনাল,একই সাথে গ্র্যানুলা ২ হাজার ২৯৯ ,এস্টেরিক্স ১৭ হাজার ৯৬৮, কারেজ ৩ হাজার ৭৮০,ডায়মন্ড ৫ হাজার ৭৭৩ , লেডিরোসাটা ৩৭৫, মিউজিকা ১ হাজার ৯৮১ , রোমানা ১ হাজার ৫৪১, সানসাইন ১ হাজার ৪০৩ ,বারি আলু ৮৫ (সেভেন) ৭৫ ,বারি আলু ৮৬ (১২১৩) ২ হাজার ৪২৬ ,বারি আলু ৯০ (এলুয়েট) ৪১৩ , ভেলেনসিয়া ১১৪, ফ্রেস ৩২৫, এলগার ৯৮ , লেভাস্তে ১০, সাদিকা ১৯৮, কুইন এ্যানি ২০ ,আটলান্টিক ৬ এবং সূর্যমুখী আলু ১৩৭ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

আলুর উফশী ফসলের পাশাপাশি চাষিরা সাত জাতের স্থানীয় আলু চাষাবাদ করেছেন।এরমধ্যে রয়েছে লাল পাকড়ী ২ হাজার ১৪২, সাদা পাকড়ী ৬৬০, পাটনাই ২৫ ,হাগরাই ২৫ , তেল পাকড়ী ২০৫ ,ফাটা পাকড়ী ২৬০ এবং ২৮ হেক্টর জমিতে শীল বিলাতি আলু চাষাবাদ হয়েছে।

বীজ-সারে মূল্য চড়া,দাম নিয়ে,যা বলছেন চাষিরা:
গেলা ২০২৩-২৪ মৌসুমে আগাম জাতের আলু চাষাবাদ হয়েছিল ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ওই মৌসুমে আগাম আলুর দাম ছিল প্রতিমণে ১ হাজার ৫০০-২ হাজার টাকা। আবার এ ছাড়া ভরা মৌসুমে ও আলু হিমাগারে সংরক্ষণের সময় এ দাম ছিল প্রতিমণে ৫২০-৬৪০ টাকা। তবে পরে দিন দিন আলুর দাম লাগামহীন হয়ে যায়।এতে করে খাবার আলু ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত পৌছেছে বলে এমনটায় জানিয়েছেন জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র।এরপরই সময় আসে আলু রোপণের। আর এ সময় বিভিন্ন কোম্পানি বীজ আলুর দাম ৭৮ -৮০ টাকা কেজি নির্ধারণ করেন।কিন্তু কিছু সংখ্যক চাষি এ দামে পেলেও পরে তা আর মেলেনি।শেষে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে বীজ আলু প্রতি কেজি ১০০-১০৫ টাকা পর্যন্ত পৌছেছে। নিরুপাই হয়ে বেশি দামেই কিনতে হয়েছে চাষিদের। আলু রোপণের সময় সারও কিনতে গুণতে হয়েছে বেশি টাকা।

কৃষিবিদরা বলছেন, প্রতিবিঘায় ৪ বস্তা (১৬০ কেজি) আলু নির্ধারিত দামে ৮০ টাকা প্রতি কেজি দরে ১২ হাজার ৮০০ টাকা পড়েছে। তবে এ দামে বীজ খুব কম সংখ্যক কৃষকরাই পেয়েছেন। কৃষকদের ১০০-১০৫ টাকা দরে প্রতি কেজি আলু কিনতে হয়েছে। সে হিসাবে খরচ হয়েছে ১৬- ১৬ হাজার ৮০০ টাকা। জমি চাষে গুণতে হয়েছে প্রতি বিঘা প্রায় ১২০০ টাকা। সারে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বিঘায় ইউরিয়া ৪০ কেজি ১০৮০ টাকা, ডিএপি ৩০ কেজি ৬৩০, এমওপি ৪০ কেজি ৮০০,দস্তা ১ কেজি ১৫০, বোরন ২ কেজি ৩০০, জীপসাম ১০ কেজি ১০০, ম্যাগনেসিয়াম ২ কেজি ১০০, জৈব (গোবর) সার ২ হাজার টাকা হিসাবে মোট ৫ হাজার ১৬০ টাকা খরচ হয়। তবে চাষিরা এ হিসাবের বাইরে জমিতে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করেন। সে হিসাবে এবার প্রতি বস্তার সারে ২০০-৩০০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে। কোনো কোনো কৃষক ৫০০ টাকা বেশি দিয়েও কিনেছেন।

আলু রোপণের পর কীটনাশক দিতে খরচ হয় প্রায় ২ হাজার টাকা। শ্রমিক মজুরি ৭ হাজার টাকা। অনেক চাষিরা আবার জমি লিজ নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এলাকা ভেদে ৭-১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়েছে। সেচ খরচ রয়েছে। সবমিলিয়ে বিঘায় চাষীদের ৪০-৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। আগাম ফলন বিঘায় ৫০-৬০ মণ। বর্তমান বাজার মূল্য প্রতিমণ ৭২০-৮৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে বিঘায় ৩৬- ৫২ হাজার ৮০০ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে। এতে করে কিছু চাষি লোকসান গুনছেন, আবার কেউ অল্প কিছু লাভ করছেন। তবে ভরা মৌসুমে এরকম বাজার থাকলে এবং ফলন ভালো হলে চাষিরা কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখবেন ।

জেলার কালাই উপজেলার হারুঞ্জ এলাকার বাসিন্দা শামীম আহম্মেদ স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি নিজের ৭ বিঘা জমিতে এ বার আলু চাষাবাদ করছেন। মিউজিকা, ১২১৩ ও এস্টেরিক্স জাতের আলু চাষাবাদ নিয়ে তিনি বলেন, জমি চাষাবাদের শুরু থেকে বীজ,সারসহ সব মিলে খরচ আসতেছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা, আবার জমি লিজ নেওয়া থাকলে আরও ১০ হাজার টাকা বেশি। তবে বর্তমানে যে বাজার সে হিসাবে প্রতি মণ ৮০০ টাকা ও ফলন ৫০ মণ ধরে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ উঠছেনা বরং লোকসান হচ্ছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, জয়পুরহাট এর বাজার অনুসন্ধানকারী রতন কুমার রায় বলেন,গত বছরের তুলনায় আলুর দাম এবার কম। গত বছর এ সময় ৪৮- ৫২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। আর এবার ১৮ টাকা থেকে ২৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে আলুর মূল্য কমে এসেছে।

আলু চাষী সুমন মণ্ডল বলেন,এবার ব্যালকাপাতার মাঠে আলু চাষ করেছি সাড়ে ৯ বিঘা জমিতে। সব ১২১৩ জাতের আলু। বিঘায় ৫৫-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আলু বিক্রি করছি প্রতিমণ ৭২০ টাকা দরে।এতে তো আমাদের পত্তা (লাভ) হচ্ছে না। যদি ১ হাজার টাকা মণ থাকতো, তাহলে পত্তা হতো। এ বছর আলুর দাম অনেক কম।

কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, ৩ বিঘাতে মিউজিকা আলু লাগিয়েছি। আলুর সার-বীজ সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে আলু যদি ৬০ মণ ফলনও হয় তাহলে ৮৩০-৮৩০ টাকা প্রতিমণ দাম ধরে ৫০ হাজার টাকার মতো বিক্রি। তাহলে লাভ কি?

আবাদ-আমদানি বেশি থাকায় কমেছে দাম,বলছেন ব্যবসায়ীরা:
জেলায় আলু চাষ এবার বেশি হয়েছে। আবার অনেক জেলায় আগাম আলু উত্তোলন বেশি হয়েছে।এতে করে আমদানি বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকরা সরিষা চাষ কমে দিয়ে আলু চাষ বেশি করেছেন। আবার চাহিদার তুলনায় আমদানি বেড়েছে।এজন্য চাষি পর্যায়ে আলুর দাম কম রয়েছে।

কালাই উপজেলার মোলামগাড়িহাটের আলু ব্যবসায়ী আজাহার আলী আকন্দ বলেন, কিছু দিন আগে ৩ জাহাজ আলু আমদানি করা হয়েছে। এছাড়াও এবার আলুর উৎপাদন বেশি হয়েছে। ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরে আলু উত্তোলন বেড়েছে। ফলে অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম কম। আমার আলুগুলো মাগুরা, ফরিদপুর, বোয়ালমারী,কানাইপুর অর্থাৎ দক্ষিণবঙ্গে যায়। প্রতিদিন ৪- ৫ ট্রাক আলু কেনাবেচা করি। অর্থাৎ প্রতিদিন ১২০০-১৫০০ বস্তা আলু যায়। পরে আরও বেশি আলু যাবে। কমিশন ব্যবসায়ী আজাহার আলী বলেন, প্রতি বস্তায় ২০ টাকা কমিশন পাই। এখানে বস্তা খাজনা, শ্রমিক, গাড়ি সব খরচ পার্টি দেয়।

বৃহত্তর বগুড়া জেলা (বগুড়া-জয়পুরহাট) কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার প্রসাদ বলেন,সবকিছু বিবেচনা করে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন কেজিতে আলুর ভাড়া ১ টাকা বাড়িয়েছে।

আলু সংরক্ষণেও স্বস্তি নেই,বাড়ল ভাড়া:
এ জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯ টি হিমাগার রয়েছে। এর সবগুলোতেই সংরক্ষণ করা হয় আলু। তবে জেলায় যেখানে আলু উৎপাদন ৯ লাখ মে: টন ছাড়িয়েছে সেখানে এসব হিমাগারে সব মিলিয়ে মাত্র ১ লাখ ৯২ হাজার মে: টন আলু সংরক্ষণ করতে পারে। এরমধ্যে খাবার আলু ১ লাখ ৩০ হাজার মে: টন,বীজ আলু ৬২ হাজার মে: টন।আর জেলায় বীজ আলুর চাহিদা প্রায় ৬০ হাজার মে: টন আর খাবার আলুর প্রয়োজন হয় প্রায় ৪০ হাজার মে: টন।এসব হিমাগারে আগে সংরক্ষণ করা যেত ৩২০ টাকায় ৮০ কেজি আলু। গত বছর সংরক্ষণ ভাড়া বাড়ানোর পর এবারও ভাড়া বাড়িয়েছে হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)। ইতোমধ্যে আলু সংরক্ষণ ভাড়া প্রতি কেজি ৮ টাকা ধার্য করে হিমাগারগুলোতে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যানার।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ প্রফেসর, ড. এম আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, কৃষি যেহেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ তাই কতটুকু প্রয়োজন, সেটুকুই চাষ করা দরকার। এখানে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর বা অন্য যেসব দপ্তর রয়েছে,তাদের কন্ট্রোল থাকা দরকার। এটি হলে ১ বছর পরপর কৃষকদের যে ক্ষতি, তা আর হবে না। এক্ষেত্রে এই ছোট দেশে সরকারের পাশাপাশি চাষিদেরও বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে।

আগামীতে যে প্রভাব পড়তে পারে:
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোছা: রাহেলা পারভীন বলেন, এ জেলায় ৪৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে,আগাম আলুর চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর। আবহাওয়া মোটামুটি ভালো যাচ্ছে। আলুতে এবার তেমন রোগ বালাই নেই। তারপরও আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। উৎপাদিত আলু হিমাগারে রাখার পর যেটি থাকে এগুলোর মধ্যে কিছু আলু প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়।প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণ করলে ছয় মাস সংরক্ষণ করে রাখতে পারবে। কৃষি বিপণন এর উদ্যোগ নিয়েছে।

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০