জহিরুল ইসলাম, ফরিদপুর : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কুদ্দুস মোল্লা (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন নারী-পুরুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের মক্রমপট্টি এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত কুদ্দুস মোল্লা ওই এলাকার প্রয়াত হামেদ মোল্লার ছেলে। উভয় পক্ষের আহত প্রায় ৪০ জন ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের মকরমপট্টি এলাকায় কুটনার মোড় নামক স্থানে দবির মাতুব্বর এর দলের সোলেমান মাতুব্বর, বজলু মুন্সীর দলের শাহ আলম মুন্সী কে গালি দেন রোববার রাত ৮ টার দিকে । এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এরপর কুদ্দুস মোল্লাকে গলায় কোপ দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
স্থানীয়রা আরও জানান, ওই গ্রামের বজলু মুন্সী ও তার প্রতিপক্ষ দবির মাতুব্বরের মধ্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। রবিবার সন্ধ্যায় মিরাজ মুন্সী নামের এক ব্যাক্তি বজলু মুন্সীর পক্ষ ছেড়ে প্রতিপক্ষের দবির মাতুব্বরের পক্ষে যোগদান করেন। এই নিয়ে আগামীকাল সোমবার দবির মাতুব্বর ও মিরাজ মুন্সীর লোকজন খিচুড়ি ভোজের আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর তারা সংঘবদ্ধভাবে ওই গ্রামের মক্রমপট্টি ছোট বাজার এলাকায় তাদের শক্তি প্রদর্শনে মহড়া দেয়। তখন বাজারে থাকা বজলু মুন্সীর পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ঝগড়া বাধে। এই নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, ঢাল সড়কি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। যা প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী চলে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ সহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে বজলু মুন্সীর পক্ষের কুদ্দুস মোল্লা নামের এক ব্যাক্তির গলায় ধারালো ট্যাটা বিধে নিহত হয়। আহত হয় উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে।
ঘারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: মুনসুর মুন্সী জানান, তিনি ঢাকায় আছেন, রাতে জানতে পারেন গ্রামের দুইটি পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে ও আহত হয়েছেন অন্তত ৩০-৪০ জন। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানান তিনি।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আশরাফ হোসেন জানান, তিনি সহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) সংঘর্ষের ঘটনায় সরেজমিনে রয়েছেন। তবে, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ওসি আরও জানায়, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে আগামীকাল ফরিদপুর মর্গে প্রেরণ করা হবে। সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।